Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
রানাঘাট কাণ্ড

সিআইডি-র শেষ ভরসা মোবাইল নজরদারি

রানাঘাটের ঘটনার ন’দিন পরেও অপরাধীদের ধরার ব্যাপারে কার্যত দিশাহীন রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ। শেষ চেষ্টা হিসেবে মোবাইল ফোন নজরদারির একটি সফটওয়্যার কাজে লাগাতে শুরু করলেন গোয়েন্দারা। যদিও তাতে কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তদন্তকারীদের মধ্যেই। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা প্রথমে নিজেদের ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ কাজে লাগিয়েছিলেন। কিন্তু অপরাধীদের চিহ্নিত করা যায়নি। এ বার সিআইডি-র হাতিয়ার হয়েছে মোবাইল ফোন নজরদারির সফটওয়্যার। তবে শনিবার এক সিআইডি কর্তার মন্তব্য, “এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে অপরাধী খোঁজা অনেকটা খড়ের গাদায় আলপিন খোঁজার মতোই ব্যাপার। তবে অন্য কোনও উপায় না থাকায় শেষ পর্যন্ত এই পথই নেওয়া হচ্ছে।”

রানাঘাট ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলালেন কামদুনির মৌসুমী কয়াল। রবিবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

রানাঘাট ধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলালেন কামদুনির মৌসুমী কয়াল। রবিবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৪
Share: Save:

রানাঘাটের ঘটনার ন’দিন পরেও অপরাধীদের ধরার ব্যাপারে কার্যত দিশাহীন রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ। শেষ চেষ্টা হিসেবে মোবাইল ফোন নজরদারির একটি সফটওয়্যার কাজে লাগাতে শুরু করলেন গোয়েন্দারা। যদিও তাতে কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তদন্তকারীদের মধ্যেই।

তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা প্রথমে নিজেদের ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ কাজে লাগিয়েছিলেন। কিন্তু অপরাধীদের চিহ্নিত করা যায়নি। এ বার সিআইডি-র হাতিয়ার হয়েছে মোবাইল ফোন নজরদারির সফটওয়্যার। তবে শনিবার এক সিআইডি কর্তার মন্তব্য, “এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে অপরাধী খোঁজা অনেকটা খড়ের গাদায় আলপিন খোঁজার মতোই ব্যাপার। তবে অন্য কোনও উপায় না থাকায় শেষ পর্যন্ত এই পথই নেওয়া হচ্ছে।”

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে নজরদারির ক্ষেত্রে ‘টাওয়ার ডাম্প’ বলে একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। ওই সফটওয়্যার দিয়ে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল টাওয়ারে নির্দিষ্ট সময়ে কোন কোন নম্বরে ফোন গিয়েছে বা এসেছে, তা চিহ্নিত করা যায়। সেই পদ্ধতি নিয়ে রানাঘাটের স্কুলে দুষ্কৃতী হামলার দু’ঘণ্টা আগে থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ওই এলাকার কোন কোন মোবাইল চালু ছিল তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ওই তালিকায় কোনও একটি বিশেষ ফোন থেকে কোনও একাধিক ‘কল’ এসেছিল বা গিয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সিআইডি কর্তাদের অনুমান, ওই ঘটনায় স্থানীয় কেউ ‘টিপার’-এর কাজ করেছিল। সে ক্ষেত্রে ওই টিপারের ফোন থেকে রাতে দুষ্কৃতীদের বা মূল চক্রীর ফোনে একাধিক এবং বারবার ফোন যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সব দুষ্কৃতীদের এক জায়গায় জড়ো করার জন্য অনেক সময়ে একটি ফোন থেকে কয়েকটি বিশেষ ফোনে কল করার সম্ভাবনা রয়েছে। সিআইডি অফিসারদের কথায়, অনেক সময় এ থেকে কাজ হয়। যেমন বারাসতে রাজীব দাস হত্যাকাণ্ডের সময় এই সফটওয়্যারটি কাজে লাগিয়ে ফল পাওয়া গিয়েছিল। অনেক সময় একটি বিশেষ টাওয়ার থেকে এত ফোন কল হয় যে এই পদ্ধতি কাজে লাগে না। সুতরাং রানাঘাটে এ পদ্ধতিতে সাফল্য মিলবে কি না, তাই নিয়ে খুব একটা নিশ্চিত হতে পারছেন না তদন্তকারীরা। এমনিতে সোর্স নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অপরাধীদের খুঁজে বের করাই অনেক সহজ পদ্ধতি। কিন্তু সেটাও এ ক্ষেত্রে একেবারেই কাজ করেনি বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সিআইডির অপরাধ জগতের সোর্স নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে?

রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের কর্তারা সরাসরি স্বীকার না করলেও তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। গোয়েন্দাদের একাংশ বলছেন, রানাঘাটের তদন্তে সিআইডির সেরা চারটি দল নামানো হয়েছিল। স্থানীয় দুষ্কৃতীদের জেরার পাশাপাশি অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত সোর্সদেরও কাজে নামানো হয়েছিল। তবু রহস্য কাটেনি গোয়েন্দারা। এ দিনও উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ সীমান্ত থেকে এক সন্দেহভাজনকে আটক করে জেরা করা হয়। কিন্তু কোনও সূত্র না মেলায় রাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE