সুমিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে স্বামীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে আজীবন সশ্রম কারাদণ্ড হল এক মহিলার। সুমি পাণ্ডে নামে ওই মহিলাকে মঙ্গলবার এই সাজা দেন জঙ্গিপুরের দ্বিতীয় ফার্স্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক দুরি ভেঙ্কট শ্রীনিবাস।
আদালত সূত্রে খবর, স্ত্রীর অন্য সম্পর্কের প্রতিবাদ করা এবং বিবাহবিচ্ছেদ দিতে অস্বীকার করার জন্যই স্বামী রাজেন্দ্র পাণ্ডেকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ১৫ মে রঘুনাথগঞ্জ থানার গণকর গ্রামে। গভীর রাতে রাজেন্দ্রকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। দীর্ঘ সাত বছর ধরে ওই মামলার বিচার চলেছে। এর মধ্যেই সুমি দ্বিতীয় বিয়ে করে। কলকাতার টালিগঞ্জে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সে বর্তমানে থাকছিল। সরকারি আইনজীবী আফজালউদ্দিন জানান, কোনও প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী ছিল না এই ঘটনার। পুলিশ মৃতের দাদা বিশ্বজিতের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে মামলা রুজু করেছিল আত্মহত্যার ধারায়। কিন্তু প্রায় ৮৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় চিকিৎসক গোপাল সিংহ যাদবের কাছে রাজেন্দ্র মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, সুমিই তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এমনকি, সমর সরকার নামে আরেক চিকিৎসকের জমা দেওয়া ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তেমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। এরপরই বিচারকের নির্দেশে পুলিশ ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগে চার্জশিট জমা দেয়। আদালতকক্ষে ওই দুই চিকিৎসকের দেওয়া সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এই মামলার বিচারক সুমিকে আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দেন। এদিকে, সাজা শুনে এদিন এজলাসের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সুমি।
সোমবার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করার সময়েও সে ভেঙে পড়েছিল। সুমি তার শিশুকন্যাকে জেলে নিজের কাছে রাখার আবেদন করলে তা-ও নাকচ হয়। এদিন সাজা ঘোষণার পর বিচারককে কিছু বলার চেষ্টা করেছিল সুমি। বিচারক শোনেননি। সাজা ঘোষণার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পুলিশ সুমিকে এজলাস থেকে নিয়ে চলে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy