Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিধি বাম, রঞ্জন তবুও বিজেপিতে

শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল সব। বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে দেখা গেল, জঙ্গিপুরের প্রার্থী মাফুজা খাতুন। রঞ্জন ভট্টাচার্য নন।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০২:৩৭
Share: Save:

দল তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিল। আশ্বস্ত ছিলেন তিনিও। কিন্তু ওই, বিধি বাম! শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল সব। বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে দেখা গেল, জঙ্গিপুরের প্রার্থী মাফুজা খাতুন। রঞ্জন ভট্টাচার্য নন। তবে প্রার্থী হতে না পেরে রঞ্জনবাবু যে এখনই বিজেপি ছাড়ছেন না তা নিয়ে নিশ্চিত বিজেপি।

বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলছেন, “রবিবারেও রঞ্জনবাবুর সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। তাঁকে এ বারের নির্বাচনে প্রার্থী করার ব্যাপারে সুপারিশও করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সভাপতি তাঁর নাম কেটে দিয়েছেন। তবে পছন্দের প্রার্থী হিসেবে আগামী কোনও নির্বাচনে তাঁর কথা বিবেচনা করবে দল। তবে এটুকু বলতে পারি, মাফুজাকে প্রার্থী করে জঙ্গিপুরের সংখ্যালঘুদের কাছে বিজেপি অন্তত একটা ভাল বার্তা দিতে পেরেছে।”

বিজেপির এক জেলা নেতা জানাচ্ছেন, লোকসভায় টিকিট না পেলেও ২০২১ সালের বিধানসভায় মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষ্যেই দলে থাকবেন রঞ্জন এবং দলের হয়েই
কাজ করবেন।

বিজেপির ঘোষিত প্রার্থী মাফুজা খাতুন রবিবার জঙ্গিপুরে এসে বৈঠক করেন কর্মীদের সঙ্গে। তবে এ দিন তাঁর ধারে কাছে দেখা যায়নি রঞ্জনকে। মাফুজা জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে রঞ্জনের এখনও কোনও কথা হয়নি। প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে থাকে অনেকেরই। কিন্তু সবসময় তা হয় না। তবে প্রচারে তাঁর সাহায্য চাওয়া হবে।

তবে লোকসভায় জঙ্গিপুরের টিকিট পাওয়ার জন্য রঞ্জনের এই দলত্যাগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা। সুব্রত বলেন, “দল করেন তো অনেকেই। লোকসভা বা বিধানসভায় ক’জন টিকিট পান? সবাইকে পদও দেওয়া যায় না। তার মানে এই নয় যে, দল তাকে উপেক্ষা করছে। রঞ্জন কবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাই তো আমার জানা নেই। তিনি দলকেও এ ব্যাপারে কিছু জানাননি। তাঁর জানা উচিত, তৃণমূলে শেষ কথা বলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

সুব্রতর সংযোজন, ‘‘লোকসভার টিকিট পেতে বিজেপিতে গিয়েছিলেন রঞ্জন। সেখানেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। এখন কী করবেন সেটা
তিনিই জানেন।’’

বহরমপুরের বাসিন্দা রঞ্জনবাবু দীর্ঘ ২৫ বছর কংগ্রেসের নেতা হিসেবে জেলায় পরিচিত ছিলেন। পরে ১০ বছর ধরে তৃণমূলে ছিলেন। রঞ্জনবাবুর দাবি, তৃণমূলে যোগ্য মর্যাদা না পেয়েই তিনি সম্প্রতি যোগ দেন বিজেপিতে। তিনি ষোলো আনা নিশ্চিত ছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর আসনে তিনিই বিজেপির টিকিট পাবেন। কারণ, বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি সেটাই চেয়েছিলেন।

রঞ্জনবাবুর কথায়, “বাবা শ্রীপদ ভট্টাচার্য ৩১ বছর বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। আমিও দলের জন্য পরিশ্রম করলেও কংগ্রেস ও তৃণমূল কেউই কেউই আমাকে যোগ্য মর্যাদা দেয়নি।’’

২০১৪ সালে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের দলীয় পর্যবেক্ষক ছিলেন রঞ্জন। প্রত্যাশা ছিল, তৃণমূল থেকে লোকসভায় মনোনয়ন পাবেন তিনি। কিন্তু তা হয়নি।

রঞ্জন বলছেন, ‘‘অথচ কী না করেছি তৃণমূলের জন্য! জঙ্গিপুরকে হাতের তালুর মতো চিনি। দলের এই উপেক্ষা মানতে পারিনি। আর সেই কারণেই তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিই বিজেপিতে। নিশ্চিত ছিলাম, জঙ্গিপুরে বিজেপির টিকিট আমিই পাব। কেন পেলাম না তা দলের নেতারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে আমি বিজেপিতেই থাকব এবং দলের হয়েই কাজ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Jangipur BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE