রাজনৈতিক মহলের খবর, রানাঘাটে প্রার্থী নিয়ে বেশ চাপে পড়েছে বিজেপি। ছবি: রয়টার্স।
আসনটি সংরক্ষিত তফসিলি জাতির জন্য। ঘটনাচক্রে সেই রানাঘাট আসনে এ বার তৃণমূল ও বামফ্রন্ট দুই দলই মহিলা প্রার্থী দিয়েছে। দু’জনেই তফসিলি জাতির। কিন্তু বিজেপি এখনও এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। রাজনৈতিক মহলের খবর, রানাঘাটে প্রার্থী নিয়ে বেশ চাপে পড়েছে বিজেপি। তারাও মহিলা, তফসিলি প্রার্থী দেবে নাকি মতুয়া ভোটের কথা মাথায় রেখে কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করাবে, তা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেনি।
এতে ভোটের প্রচারেও তারা বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে। প্রচার পর্বের প্রথম রবিবার যেখানে বাম ও তৃণমূল প্রার্থী দিনভর প্রচার ও জনসংযোগ চালিয়েছেন সেখানে স্থানীয় বিজেপি নেতারা কার্যত ঘরবন্দি হয়ে ছিলেন। দেওয়াল লিখনও শুরু করতে পারছেন না তাঁরা। বিজেপির একাধিক স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, গেমপ্ল্যান সাজাতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে তাঁদের।
ভোটযুদ্ধের নিরিখে রানাঘাট আসনটি এ বার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মতুয়া অধ্যুষিত এই এলাকায় বিজেপির প্রথম থেকেই জোরাল উপস্থিতি রয়েছে। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সদ্য খুন হয়ে যাওয়া বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে। সত্যজিৎ তৃণমূলের মতুয়া মুখ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী করে তাই মতুয়া ভোট ধরে রাখার ব্যাপারে দলনেত্রী মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। তার উপর রূপালী মহিলা বলে মহিলা ভোটারদের বাড়তি সহানুভূতি তাঁর দিকে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
একই ‘মহিলা ফ্যাক্টর’ বাম প্রার্থী রমা বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও থাকবে। সেই সঙ্গে রমার ক্ষেত্রে যোগ হয়েছে তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও পরিচয়। রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি রমা বিশ্বাস বামেদের পরীক্ষিত রাজনৈতিক সৈনিক। ফলে প্রতিপক্ষ হিসাবে তিনিও যথেষ্ট শক্তিশালি। এই দু’জনের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করাতে গেলে মহিলা ফ্যাক্টর, মতুয়া ফ্যাক্টর, সহানুভূতি ফ্যাক্টর ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ফ্যাক্টর—সব কিছু নিয়ে বিজেপিকে ভাবতে হচ্ছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, অর্চনা মজুমদার নামে কলকাতার এক চিকিৎসকে প্রার্থী করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। অর্চনা বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ২০১৬ সালে বাগদা বিধানসভার দলীয় প্রার্থী বিভা মজুমদারের নামও ঘোরাফেরা করছে। বিভা মজুমদার মতুয়া ঠাকুরবাড়ির ঘনিষ্ঠ। কিন্তু এই দুই মহিলা নদিয়া জেলার নন। এ দিকে রূপালী বিশ্বাস রানাঘাট লোকসভা এলাকারই বাসিন্দা। আবার রমা বিশ্বাস নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা এবং রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক।
পদ্ম শিবিরও কি তা হলে সেই স্থানীয় প্রার্থীর দিকেই ঝুঁকবে, না কি গুরুত্ব দেওয়া হবে মতুয়া যোগকে? বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেন, “যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দল নেবে।” প্রধান দুই বিরোধী রাজনৈতিক দল মহিলা প্রার্থীকে ময়দানে নামিয়ে কি কিছুটা হলেও চাপে ফেলে দিল তাদের? জগন্নাথ বলছেন, “চাপের কি আছে? মানুষ যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেবে। বিরোধীরা মহিলা প্রার্থী দিয়েছে বলে আমাদেরও মহিলা প্রার্থীই হতে হবে এটা কোনও কথা নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy