বিজেপির রাজ্য নেতারা যা-ই বলুন, নদিয়ার কর্মীদের অনেকেই মানবেন্দ্রনাথ ও সুজিতের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের আভাস দেখছেন।
মনোনয়ন জমার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেল। কিন্তু রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়ে জটিলতা কমা দূরে থাক, উল্টে সকাল থেকে জমজমাট নাটক হয়ে গেল কৃষ্ণনগরে নদিয়া জেলাশাসকের অফিসে।
সরকারি চিকিৎসকের পদ থেকে ইস্তফা গৃহীত না হওয়ায় রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী শেষ পর্যন্ত দাঁড়াতে পারছেন কি না তা স্পষ্ট হবে আজ, বুধবার স্ক্রুটিনির সময় পার হওয়ার পরে। সেই সময় শেষ হওয়ার আগেই আইনি ছাড়পত্র জমা দিতে হবে মুকুটমণিকে। তা যদি তিনি না পারেন, তাঁর জায়গায় প্রার্থী হবেন বিজেপির নদিয়া জেলা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার। মঙ্গলবার দু’জনই দলীয় প্রতীক-সহ মনোনয়ন জমা করেছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আরও দু’জন— বিজেপির জেলা দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি মানবেন্দ্রনাথ রায় এবং গত বারের প্রার্থীর ছেলে সুজিত বিশ্বাস। দু’জনেরই দাবি, দল তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে বলেছিল, যদিও বিজেপি নেতারা তা অস্বীকার করেছেন।
রাজ্য নেতৃত্বের তরফে নদিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ জানান, বুধবার স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মুকুটমণির মামলার শুনানি আছে। তার রায় তাঁর পক্ষে গেলে তিনি রানাঘাটের প্রার্থী থাকবেন। অন্যথায় প্রার্থী হবেন জগন্নাথ সরকার। তা হলে মানবেন্দ্রনাথ রায় এবং সুজিত বিশ্বাস কেন মনোনয়ন জমা দিলেন? সঞ্জয়ের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক দলে প্রায় সকলেই নেতা এবং ভোটপ্রার্থী হতে চান। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। কিন্তু দল যে বিকল্প হিসাবে জগন্নাথ সরকারের নাম ঠিক করেছে, তা ওঁদের বলে দিয়েছি।’’ বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবেও তাঁরা দাঁড়াতে পারবেন না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে বিজেপির রাজ্য নেতারা যা-ই বলুন, নদিয়ার কর্মীদের অনেকেই মানবেন্দ্রনাথ ও সুজিতের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের আভাস দেখছেন। কেননা দু’জনেই জগন্নাথ-বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত। সকালে সকলের আগে এসে মনোনয়ন জমা দেন মানবেন্দ্রনাথ। পরে সুজিত বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে আসেন দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি এবং প্রবল জগন্নাথ-বিরোধী বলে পরিচিত দিব্যেন্দু বিশ্বাস। মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে সুজিত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলে যান, “দল আমাকে মনোনয়ন জমা দিতে বলেছে। মুকুটমণি না হলে আমিই প্রার্থী হব।”
পরে আসেন জগন্নাথ ও মুকুটমণি। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অন্তত শ’দেড়েক সমর্থক। এরই মধ্যে ফের এসে হাজির হন মানবেন্দ্রনাথ। জেলা প্রশাসনিক ভবনে একটা একটা বেঞ্চিতে তাঁকে জগন্নাথ ও মুকুটমণির কাছেই বেশ কিছু সময় বসে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু জগন্নাথ ও মুকুটমণি কার্যত তাঁকে এড়িয়ে যেতে থাকেন। পরে জগন্নাথ বলেন, “দলের হয়ে আর কেউ মনোনয়ন জমা দিয়েছে বলে আমার জানা নেই। যদি কেউ দিয়ে থাকেন, সেটা ব্যক্তিগত ভাবে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy