Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভোটাতঙ্ক মুছতে মরিয়া প্রশাসন

রানিনগর ১ বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলছেন, ‘‘ইসলামপুর অঞ্চলের যে গ্রামগুলিতে ভোটের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল সেই সব অঞ্চলে আমরা বেশি বেশি করে যাচ্ছি। মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের ভোট সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সাহসও জোগানো হচ্ছে।’’

বেলডাঙার কুমারপুরে প্রশাসনের কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র

বেলডাঙার কুমারপুরে প্রশাসনের কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা ও রানিনগর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের ভয় এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে বহু এলাকায়। বেলডাঙা ও রানিনগরে সেই ভয় মুছতে মরিয়া জেলা প্রশাসন।

অভিযোগ, গত ভোটে বোমাবাজি, গুলি ও হুমকির জেরে বেলডাঙার বেশ কিছু এলাকায় অনেকেই ভোট দিতে পারেননি। বেলডাঙার কুমারপুর সুজাপুরেও সন্ত্রাস চলে। আর তারই জেরে ১৬৪ নম্বর শিবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেশিরভাগ ভোটার ভোট দিতে পারেননি। আগামী লোকসভা নির্বাচনে এলাকার অনেকেই ভোট না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

শিবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’টি বুথে ভোট দেওয়ার কথা যথাক্রমে ৪৩৭ ও ৯২৬ জন ভোটারের। তাঁদের মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৬৩৪। ভোটারদের অনেকেই প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটে গন্ডগোল হয়েছে। তাঁদের ভয় দেখানো হয়েছে। তাঁদের বলা হয়, ‘ভোট যেন ঠিক জায়গায় পড়ে। কে কোথায় ভোট দিচ্ছে তা সব জানা যাবে। তখন বিচার হবে।’ সেই ভয়ে ভোট দিতে যাননি অনেকেই। এখনও সিঁটিয়ে আছে‌ন তাঁরা।

সেই ভয় মুছতে গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নানা ভাবে এলাকায় গিয়ে ভোটারদের সাহস জোগাচ্ছে বেলডাঙা ১ ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় থানার পুলিশ। বেলডাঙা ১ বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র বলছেন, ‘‘আমরা গ্রামে গিয়ে ভোটারদের বোঝাচ্ছি। দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁদের কথা শুনছি। সঙ্গে পুলিশ ছিল। তারাও কথা বলেছে। ২৪ মার্চ বেলডাঙায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা। ভোটারদের সাহস জোগাতে তাদেরও ওই এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গ্রামে গ্রামে গিয়ে শান্তি, সচেতনতার বার্তার পাশাপাশি ভোটারদের সাহস জোগাচ্ছে রানিনগর ১ ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ। ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষ যেন কোনও ভাবে ভয় না পায় সেই কারণে ইসলামপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললেন রানিনগর ১ বিডিও মহম্মদ ইকবাল। সঙ্গে ছিলেন ইসলামপুরের ওসি অঞ্জন বর্মণও।

ইসলামপুরের নওদাপাড়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটে যে কী হয়েছে তা তো সকলেই জানেন। সে বার ভোটই তো দিতে পারলাম না। সরকারি বাবুরা বলছে, এ বার নাকি কোনও সমস্যা হবে না। নির্ভয়ে ভোট দেওয়া যাবে। বলছে সরকারি বাবুরা। দেখা যাক, কী হয়!’’

রানিনগর ১ বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলছেন, ‘‘ইসলামপুর অঞ্চলের যে গ্রামগুলিতে ভোটের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল সেই সব অঞ্চলে আমরা বেশি বেশি করে যাচ্ছি। মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের ভোট সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সাহসও জোগানো হচ্ছে।’’

এলাকার লোকজন জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত ভোটে যা হয়েছে তা সকলেই জানেন। প্রশাসনের লোকজন ঘুরে ঘুরে সাহস দিচ্ছেন। কিন্তু শুধু সাহস দিলেই হবে না। ভোটের সময় যাতে কোনও গন্ডগোল না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

বেলডাঙার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখন থেকেই যে ভাবে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের মতো তেমন কিছু হবে না। তবে ভোট তো, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE