ফাইল চিত্র।
কোটি টাকা ব্যয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা ছাপানো হয়েছে। কিন্তু তা বিলির আগেই লোকসভা ভোট ঘোষণা হয়েছে। ফলে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, সেই শুভেচ্ছা বার্তা আর বিলি করা যাবে না। অর্থাৎ, কোটি টাকা স্রেফ নষ্ট বল বলে অভিযোগ। যে কাজের জন্য সেগুলি তৈরি হল সেই কাজই করা গেল না। বাক্সবন্দি হয়ে রয়ে গেল শুভেচ্ছাবার্তা।
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজের মাধ্যমে যে সব মানুষ সুবিধা পেয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের কাছে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের মুখে ওই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপভোক্তাদের তালিকা দ্রুত তৈরি করতে বলা হয়েছিল সব দফতরকে। তার পর ব্লক, জেলা প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সেগুলি বিলি করার কথা ছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে এখনও বহু দফতরই সেই বার্তা বিলি করতে পারেনি। তার আগেই ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে।
কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, সবুজসাথী, সমব্যথী, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, গতিধারা, নিখরচায় সরকারি হাসপাতালে ওষুধ ও পরিষেবা, একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের শুভেচ্ছা বার্তা তৈরি করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা আশাকর্মীদের ওই সব শুভেচ্ছা বার্তা বিলি করার কথা ছিল। কিন্তু জেলার অনেক জায়গাতেই এই বিলির কাজ শেষ হয়নি বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। যেমন শ্রম দফতরের রানাঘাটের আঞ্চলিক কার্যালয় সব বার্তা বিলি করতে পারেনি। ওই বার্তা বিলি করার কথা ছিল সেল্ফ এমপ্লয়েড লেবার অর্গানাইজারদের (এসএলও)। কিন্তু ওই মহকুমার বহু এসএলও জানাচ্ছেন, ওই বার্তা বিলি করার ব্যাপারে তাঁদের কিছুই বলা হয়নি।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যেমন, রানাঘাট-২ এর এক এসএলও জানাচ্ছেন, বিলি তো দূরের কথা, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সে ভাবে অবগতই নন। ওই মহকুমার শাসকদল-ঘেঁষা শ্রমিক সংগঠনের কর্মী অভিজিত প্রামাণিক বলছেন, ‘‘শুভেচ্ছা বার্তা অবশ্য বিলি করা উচিত ছিল। অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা হাতে পেলেন না।’’ খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক খোলাখুলি জানাচ্ছেন, ‘‘খাদ্য দফতরের অধীনে পাঁচ রকমের রেশন কার্ড রয়েছে। জেলায় সব মানুষই ওই কার্ড পেয়েছেন। সকলের কাছে এত অল্প সময়ে চিঠি পৌঁছে দেওয়া অসম্ভব।’’ খাদ্য দফতরের এক পরিদর্শক জানান, বার্তাগুলি এসেছে নাম ধরে। পরিবার হিসেবে চিঠি এলে বিলি করতে সুবিধা হত।
একই ভাবে বেথুয়াডহরি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন মালাকার বলছেন, ‘‘আমি আগের বোর্ডে উপ-প্রধান ছিলাম। দিন দুয়েক আগেও পঞ্চায়েতে গিয়ে দেখি, অনেক শুভেচ্ছাবার্তা বিলি করা হয়নি। সেগুলি ডাঁই করে রাখা হয়েছে। আসলে বিজেপি-পরিচালিত পঞ্চায়েত ওই বার্তা বিলি করার ব্যাপারে অনীহা দেখাল।’’ আবার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মাত্র কিছু দিন আগে যাঁরা ফ্রি চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন প্রতি হাসপাতালে তাঁদের নামের তালিকা বানাতে বলা হয়েছিল। এটা অত্যন্ত জটিল, সময়সাপেক্ষ কাজ। তা শেষ করতে দেরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy