Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সমঝোতা কতটা বামে ও কংগ্রেসে

এতটা গোছানো না হলেও কংগ্রেস নিজেদের মতো করে প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে

প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, কিন্তু দেওয়াল লেখা সারা। রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র

প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, কিন্তু দেওয়াল লেখা সারা। রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার 
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৫
Share: Save:

কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের আসন সমঝোতা নিয়ে এখনও রাজ্যস্তরে টানাপড়েন চলছে। কংগ্রেসের তরফে কৃষ্ণনগর আসনটি দাবি করা হয়েছে বলে একটি সূত্রের খবর।

কিন্ত বুধবার রাত পর্যন্ত যা খবর, নদিয়ার দু’টি আসনেই সিপিএম প্রার্থী দিতে চাইছে। সেই মতো জেলা কমিটির পক্ষ থেকে একাধিক নামও সুপারিশ করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। নিজেদের মতো করে নির্বাচনী প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছেন সিপিএম নেতাকর্মীরা।

এ দিকে, কংগ্রেসও নিজেদের মতো করে প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা নেতাদের কাছে আগেই একাধিক বায়োডেটা জমা পড়েছে। সেগুলি তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল ও বিজেপির দ্বৈরথের মধ্যে এই আসন সমঝোতা হওয়া বা না হওয়াটা কিছুটা হলেও নির্ণায়ক হতে পারে। ফলে বাম-কংগ্রেস তো বটেই, ঘাসফুল এবং পদ্ম শিবিরও সে দিকে তাকিয়ে। তৃণমূল ইতিমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে। ফলে, সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরাও যত দ্রুত হয় প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছেন।

বুধবারই বামফ্রন্টের তরফে প্রার্থী ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু কংগ্রেস আরও কিছুটা সময় চাওয়ায় তা করা যায়নি। যদিও সে সব গ্রাহ্যের মধ্যে না এনে সিপিএম কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট দুই কেন্দ্রের জন্যই প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, এই দুটো আসনের কোনওটাই আমরা ছাড়ছি না।”

সিপিএম সূত্রের খবর, নদিয়ার এই দু’টি কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে বিবেচনার জন্য জেলা থেকে একাধিক নাম পাঠানো হয়েছে। কৃষ্ণনগরের জন্য আলোচনায় আছেন গত বারের পরাজিত প্রার্থী শান্তনু ঝা। উঠছে এই কেন্দ্রেরই প্রাক্তন সাংসদ জ্যোর্তিময়ী সিকদারের নামও। দলের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এসএম সাদি এবং জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, চাপড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সামসুল ইসলাম মোল্লার নামও এসেছে।

তবে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে সংখ্যালঘু প্রার্থী দেওয়া ঠিক সিদ্ধান্ত হবে কি না তা নিয়ে দোলাচলের মধ্যে আছেন বাম নেতৃত্ব। এক জেলা নেতার মতে, ‘‘এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটার একটা বড় বিষয়। সেই হিসাবে যদি ধর্মীয় মেরুকরণের মাধ্যমে ভোট হয় তা হলে সংখ্যালঘু তাস খেলে লাভ হতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আবার হিন্দু ভোট কমে যেতে পারে। আবার যদি মেরুকরণ না হয় তা হলে দু’দিক দিয়েই সমস্যা তৈরি হতে পারে।”

রানাঘাট কেন্দ্রের জন্য আলোচনায় রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ অলোকেশ দাস এবং জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক রমা বিশ্বাস। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রমা জেলার এক মাত্র বাম বিধায়কও বটে। রানাঘাটে তৃণমূল এবং বিজেপির যে দ্বৈরথ হতে চলেছে, তার মধ্যে তাঁকে ঠেলে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়েও জেলা নেতাদের একাংশের দ্বিধা রয়েছে। আলোচনায় রয়েছে গত বারের হারা প্রার্থী অর্চনা বিশ্বাসের নামও। আবার দলেরই একটা অংশ গত বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রে পরাজিত ছাত্রনেতা বাবুসোনা সরকারের নামও ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এতটা গোছানো না হলেও কংগ্রেস নিজেদের মতো করে প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। দু’টি কেন্দ্রেই একাধিক জন দৌড়ে রয়েছেন। দলের একটি সূত্রের দাবি, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের জন্য মুড়াগাছার বাসিন্দা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী প্রদীপ তরফদার, চাকদহের বাসিন্দা তথা দীর্ঘদিনের কর্মী পূজা রায়চৌধুরী এবং কলকাতার বাসিন্দা তথা আলিপুর আদালতের আইনজীবী তুলসী মুখোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। রানাঘাটের জন্য কলকাতার চিকিৎসক মায়া ঘোষের নাম আলোচনায় আছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে শেষ পর্যন্ত কোন নাম নদিয়ার দেওয়ালে লেখা হবে তা জানতে অন্তত আরও একটা দিন। কেননা ১৫ মার্চের আগে ফয়সালা হওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা নেই বলে আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্য বলেন, “শুধু প্রার্থী নিয়ে নয়, আসন নিয়েও রাজ্যস্তরে আলাপ আলোচনা চলছে। আমরা সেই দিকেই তাকিয়ে আছি।” রাতে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “সব সিদ্ধান্তই নেবেন রাজ্য নেতারা। ফলে এই মুহূর্তে আমাদের কিছু বলার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Politics Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE