কৃষ্ণনগরে কল্যাণ চৌবে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পরেই প্রবীণ নেতা সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবুর শিবিরের ক্ষোভের মুখে তাঁকে পড়তে হয়। —ফাইল চিত্র।
তিনি নেই। অথচ তিনি যেন সর্বত্রই আছেন।
১৯৯৮ সাল থেকে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম ফুলের পাশে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জুলুবাবুর নামটাই দেখতে অভ্যস্ত সকলে। এবার তাঁর জায়গায় বিজেপি প্রার্থী ‘বহিরাগত’ কল্যাণ চৌবে। রবিবার কৃষ্ণনগরে কল্যাণের প্রথম নির্বাচনী প্রচারে সেই জুলুবাবুর ‘অদৃশ্য উপস্থিতি’ যেন স্পষ্ট টের পাওয়া গেল।
এ দিন প্রচারসভার আশপাশে দেখা যায়নি সত্যব্রতের অনুগামীদের। বিজেপি সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে জুলুবাবুর পরিবর্তে কল্যাণ চৌবের নাম ঘোষণা হতে এঁরাই ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। এমনটা যে হতে পারে তা বুঝতে পেরেছিলেন বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ। তাই নাম ঘোষণা হতেই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন জুলুবাবুর কলকাতার বাড়িতে, আশীর্বাদ নিতে। জুলুবাবু তাঁকে আশীর্বাদ করলেও এখনই সেই রাস্তায় হাঁটতে রাজি নন তাঁর অনুগামীরা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জুলুবাবু প্রচারে বার হলে তবেই তাঁরা যোগ দেবেন। তবে সেটা আদৌ সম্ভব হবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। কারণ, বয়সজনিত শারীরিক অসুবিধার কারণ দেখিয়ে তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। ফলে রোদে-জলে পুড়ে জুলুবাবু কতটা প্রচার করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বিষয়ে প্রার্থী নিজে আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমি জুলুবাবুর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আশীর্বাদ করেছেন। আমি অনুরোধ করেছি যাতে তিনি একবার কৃষ্ণনগরে আসেন।’’ কল্যাণের দাবি, আগামী সপ্তাহে জুলুবাবু এসে সভা করবেন। সেই সভার দিকেই আপাতত তাকিয়ে জেলা বিজেপির অন্য নেতারা। জেলার এক নেতার কথায়, “জুলুবাবুকে দিয়ে অন্তত একটা সভা করাতেই হবে। একটা বার্তা দিতেই হবে।”
তবে বিজেপির নেতা-কর্মীদেরই একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, জুলুবাবুকে দিয়ে সভা করাতে পারলেই কি জয়ের আশা বাড়বে? কারণ, টানা পাঁচবার এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েও তিনি জিতেছেন মাত্র একবার। ১৯৯৯ সালে। তাও সেটা তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে। বাকি চারবার বিজেপির টিকিটে লড়াই করে হেরেছেন। গতবার প্রবল মোদী হাওয়াতেও তিনি ২৬ শতাংশের বেশি ভোট তুলতে পারেননি। ছিলেন তৃতীয় স্থানে।
কল্যাণ নিজে অবশ্য তাকিয়ে জুলুবাবুর দিকে। শনিবার রাতে কৃষ্ণনগরে এসেছেন তিনি। এ দিন জেলার নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে আনন্দময়ী তলা মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেছেন। আশপাশে বিক্ষুব্ধদের দেখা যায়নি। কল্যাণ বলেন, “আমি সবে এসেছি। আমাকে বহিরাগত ভেবে যাঁরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন, তাঁরাও আমার সঙ্গে থাকবেন। দু-চারদিন যাক, দেখুন না কী হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy