Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিছক শলা! প্রশ্ন থাকলই

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, ভোট পর্বে একাধিক অভিযোগ করা হলে কোনও কিছুকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না জেলা প্রশাসন।

বিবেক দুবে। নিজস্ব চিত্র

বিবেক দুবে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:০৩
Share: Save:

আসন্ন লোকসভা ভোটের সঙ্গে গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটকে মেলালে ‘ভুল’ হবে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে পরোক্ষে সেই বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে।
সোমবার এবং মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল এবং পর্যবেক্ষকদের (সাধারণ, খরচ সংক্রান্ত এবং পুলিশ) সঙ্গে বৈঠক করেন বিবেক। সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ টেনে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বুঝিয়েছেন, যে দুটি ভোট সম্পূর্ণ আলাদা। লোকসভা নির্বাচন পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন। তা যেন মাথায় রাখা হয়। যদিও এ দিন বৈঠক প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি বিবেক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পঞ্চায়েতের পুনরাবৃত্তি যেন কোনও ভাবেই লোকসভায় না হয়, তাই বোঝাতে চেয়েছেন বিবেক। প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিক বৈঠকে মুর্শিদাবাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ‘অসন্তোষ’ও প্রকাশ করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। অভিযোগ, ভোট পর্বে একাধিক অভিযোগ করা হলে কোনও কিছুকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না জেলা প্রশাসন। এই পরিস্থিতির মধ্যে মুর্শিদাবাদ নিয়ে কমিশনে যে রিপোর্ট বিবেক দিতে চলেছেন, তা ইতিবাচক না হওয়ার সম্ভাবনাই ক্রমশ বাড়ছে বলে মত কমিশনের একাংশের। কয়েকটি নির্দিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ‘সন্তুষ্ট’ নন বিবেক। কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে ওই সব বিধানসভা কেন্দ্রের উল্লেখও থাকতে পারে বলে খবর। সূত্রের খবর, বিবেকের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মুর্শিদাবাদে আসতে পারেন উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। সোমবারই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার সঙ্গে দেখা করেছিলেন এআইসিসি ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। অরোরার কাছেও মুর্শিদাবাদ নিয়ে নালিশ জানিয়েছিলেন তাঁরা। এমনকি, পঞ্চায়েত ভোটের কয়েকটি ফুটেজও নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
সোমবার রাজনৈতিক দলগুলির থেকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে একাধিক অভিযোগ পেয়েছিলেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় ছিল জেলা পুলিশ প্রশাসন ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে, বিভিন্ন থানার ওসিদের অন্য জেলায় বদলি না করে এক জেলায় রেখে দেওয়া হয়েছে, জেলাশাসক ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা তুলে শাসকদলের প্রার্থীদের মধ্যে বিলি করছেন, পোস্টাল ব্যালট লুঠ করা হচ্ছে, ভিভিপ্যাটে ক্যামেরা লাগানো আছে, তাতে কে কোথায় ভোট দিলেন তা নবান্ন দেখতে পারবে বলে প্রচার করা হচ্ছে—সহ ১৬টি অভিযোগ।
বৈঠক প্রসঙ্গে জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদে থাকা সাত জন পর্যবেক্ষকের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।’’ পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের বক্তব্য, ‘‘বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন। আমরা উত্তর দিয়েছি।’’
সোমবারের বৈঠকে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল জেলাশাসক-পুলিশ সুপারকে সরিয়ে রেখে একাই বিবেকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ একাধিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই তাঁদের অভিযোগ। সে কারণেই তাঁদের সামনে কথা বলা হয়নি। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ডিএম ও এসপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE