Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

উদ্বাস্তু মনই লক্ষ্য মমতার

মঙ্গলবার হবিবপুরের কর্মিসভায় দলিল প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘৮৪টা কলোন পেয়ে গিয়েছে। বাকিগুলো কেন্দ্রীয় সরকার বা অন্যের জায়গায় বসে আছে। আমাদের সরকার সব কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আপনার দলিল পাবেনই।’’

কর্মিসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মঙ্গলবার রানাঘাটের হবিবপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

কর্মিসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মঙ্গলবার রানাঘাটের হবিবপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

সম্রাট চন্দ
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:০২
Share: Save:

মতুয়া তথা উদ্বাস্তু অধ্যুষিত রানাঘাটে সিএএ-এনআরসি নিয়ে সতর্ক করতে এসে কলোনির জমির দলিলকেই অস্ত্র করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার হবিবপুরের কর্মিসভায় দলিল প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘৮৪টা কলোন পেয়ে গিয়েছে। বাকিগুলো কেন্দ্রীয় সরকার বা অন্যের জায়গায় বসে আছে। আমাদের সরকার সব কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আপনার দলিল পাবেনই।’’

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বা ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা কলোনিতেও জমির দলিল দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। যদিও তার আইনি বৈধতা নিয়ে সংশয় রয়েছে উদ্বাস্তুদের অনেকেরই। কিন্তু যে রানাঘাট কেন্দ্র গত লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছে, সেখানে উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়ে কাছে টানাই এখন তৃণমূল সরকারের অন্যতম প্রধান রণনীতি।

এ দিন মমতার সভায় হাজির ছিলেন তৃণমূলের উদ্বাস্তু সংগঠনের রাজ্য নেতা বৈরাগী, কৃষ্ণগঞ্জের মতুয়া নেতা প্রমথনাথ বসুরা। মমতা বলেন, ‘‘বনগাঁয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের ডাকে তৃণমূলের যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সকলেই য়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তার জন্য সবাইকে আমার ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা নমস্কার জানাচ্ছি।’’

নির্বাচনী সভা করতে আসেননি জানিয়ে সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, ‘‘ আমি বিজেপি নই যে গুলি করে মানুষ মেরে দিই। ওদের মতো দুঃশাসনের পার্টি নই যে বলব মানুষের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে এসো। মেয়েদের ওপরে অত্যাচার করো।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর আশ্বাস, ‘‘বারবার বলেছি, ভয় পেয়ো না। তোমাদের গায়ে আমি হাত লাগাতে দেব না।’’ লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি দেদার টাকা ছড়িয়েছিল দাবি করে মমতা বলেন, ‘‘আপনাদের আবার নতুন করে প্রমাণ দিতে হবে আপনারা এই দেশের নাগরিক কিনা? কতগুলো প্রধানমন্ত্রীকে আপনারা নির্বাচিত করেছেন? ভোটটা কে দিয়েছে? নাগরিকেরা তো?’’ দিল্লিতে বাঙালি দেখলেই বাঙালি দেখলেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি আক্ষেপ করেন।

তৃণমূলের শুধু রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার কর্মীরাই এ দিন সভায় এসেছিলেন। আজ, বুধবার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক জনসবার পাশাপাশি আর একটি যে কর্মিসভা হচ্ছে, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার কর্মীরা সেখানে আসবেন। তবে নদিয়ার এক মাত্র তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং সব বিধায়ক সভায় হাজির ছিলেন। নেত্রীর এই জেলাসফর থেকেই তৃণমূল সর্বত্র পুরভোটের ডঙ্কা বাজিয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছিল। মমতা সে পথে না গিয়ে বরং নাগরিকত্ব আইনকেই পাখির চোখ করেছেন। তবে বিজেপির পাশাপাশি সিপিএম-কংগ্রেসকেও তিনি ছেড়ে কথা বলেননি মমতা। তাঁর দাবি, ‘‘ওরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে এসেছে। যাতে বিজেপিকে সাহায্য করা যায়।’’

কৌশলে এনপিআর-এর জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হতে পারে বলেও এ দিন কর্মীদের সতর্ক করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসা করে মায়ের নাম কী, বাবার নাম কী, কাগজপত্র একদম দেবেন না। যদি গিয়ে বলে আধার কার্ড জমা দিন, দেবেন না। যদি বলে, বাড়িতে কে কে আছে বলুন, বলবেন না।’’ এমনকি তাঁর নাম করেও কেউ তথ্য চাইলে দিতে নিষেধ করে মমতা বলেন, ‘‘আমার ছবি দিয়ে বললেও শুনবেন না। আমি যখন সরাসরি বলব, আপনারা আমার গলা চেনেন, তখন বিশ্বাস করবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Matua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE