পরবের আনন্দে। নিজস্ব চিত্র
নতুন জামাটামা হয়নি। পুরনো ফেজ টুপিতে সুতো ফেঁসে যাওয়া স্মৃতি। তা হোক নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে ইদের সকালে পাতে তবু পরোটা-পায়েস। বেলায় ভাতের থালায় মাংস। চোঁয়া গ্রামের সখিনা এখনও সুভায় রায়চৌধুরীর নিপাট আশ্রয়ে। নিরাশ্রয় সখিনাকে দুই সন্তান-সহ নিজের বাড়িতে রেখেছেন বলে এক সময়ে গ্রামে তাঁর যজমানি তো বটেই বন্ধ হয়েছিল ধোপা-নাপিত। সুভাষবাবু অবশ্য তাতে দমে যাননি। বরং স্ত্রী ইলোরাকে পাশে পেয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘মানুষকে ধর্মের বিভেদ না রেখে আশ্রয় দেওয়া আমার কাছে সব চেয়ে বড় ধর্ম।’’
সেই থেকে হরিহরপাড়ার ওই গ্রামে সখিনা সুভাষবাবুর মেয়ের মতোই, বাড়ির আর পাঁচটা আটপৌরে কাজ এবং অকাজের সঙ্গী। তবে, উদার মনের সুভাষবাবু স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, নিজের ধর্ম পালনে বাধা নেই মেয়েটির। সখিনা আমতা আমতা করলেও, এ দিন নিজেও সখিনা ও তাঁর পুত্র-কন্যার জন্য একটু ভাল খাবারের আয়োজনে ত্রুটি রাখেননি। বাড়ির উঠোনে বসে ইলাদেবী বলছেন, ‘‘যতটুকু পারি ওদের জন্য আয়োজন করেছি, নতুন পোশাক কিনে হয়ত দিতে পারিনি। তবে মনে রাখবেন, এ উৎসব আমাদেরও।’’ পায়েস-পরোটা-মাংসের সঙ্গে লাচ্চা-সেমুই হয়েছে সবই। দুপুরে বাজার থেকে দই-মিষ্টিও কিনে এনেছেন সুভাষবাবু। সুভাষবাবুর মেয়ে কাকলিও বলছেন, ‘‘সখিনা একা নয়, ইদের আনন্দ আমাদের সবার। আমরাও সে আনন্দ ভাগ করে নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy