Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মদে বেহুঁশ করে গলা টেপে সুকান্ত

আকণ্ঠ মদ খাওয়ানোর পরে বেহুঁশ হয়ে পড়া প্রসেনজিৎকে গলা টিপে মেরেছিল সুকান্ত। পুলিশের দাবি, জেরায় সে নিজেই এই কথা কবুল করেছে। 

পূজা। নিজস্ব চিত্র

পূজা। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র সিকদার ও নির্মল বসু
বাদুড়িয়া ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

আকণ্ঠ মদ খাওয়ানোর পরে বেহুঁশ হয়ে পড়া প্রসেনজিৎকে গলা টিপে মেরেছিল সুকান্ত। পুলিশের দাবি, জেরায় সে নিজেই এই কথা কবুল করেছে।

শুক্রবার গ্রেফতার হওয়া ইস্তক কখনও একা, কখনও প্রসেনজিতের বৌদি শম্পার মুখোমুখি বসিয়ে টানা জেরা করছে বাদুড়িয়া থানার পুলিশ। তাদের দাবি: জেরায় সুকান্ত বলেছে, ‘‘ওকে খুন করে ভাল করেছি, না হলে হয়তো ও-ই আমাকে মেরে ফেলত।’’ স্থানীয় চাতরা গ্রামের বাড়িতে খুনের পরে রাতেই জলকাদা ভেঙে মৃতদেহ টেনে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে এক ডোবায় পাটগাছের নীচে চাপা দিয়ে আসে সে। তবে সুকান্তের দাবি, সবই সে করেছে শম্পাকে ভালোবেসে।

নদিয়ার ধানতলার ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ রায় নিখোঁজ হয়েছিলেন গত ২৭ জুলাই। দু’দিন পরে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানায় গিয়ে তাঁর দেহ শনাক্ত করেন তাঁর দাদা শঙ্কর রায়। তার দু’দিন পরে গ্রেফতার হন শঙ্করের স্ত্রী শম্পা। প্রসেনজিতের ব্যবসার সঙ্গী সুকান্ত বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং তাতে বাগড়া দেওয়াতেই এই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পারে। ওই দু’জনেই আপাতত বাদুড়িয়া থানার হেফাজতে।

শম্পার যেমন দুই নাবালিকা মেয়ে রয়েছে, সুকান্তেরও আছে আট ও দশ বছরের দুই ছেলেমেয়ে। আগেই তার স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন। দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি আপাতত রানাঘাটে বাপের বাড়িতে আছেন।

একই রকম একা প্রসেনজিতের স্ত্রী পূজাও। দু’মাসের শিশু কোলে। চোখে অনন্ত শূন্যতা। তাঁর মা শিপ্রা এসে রয়েছেন মেয়ের কাছে। পূজার বড় ছেলের বয়স বছর চারেক। বাবার মোটরবাইকে চেপে ঘোরা ছিল তার শখ। বাবাকে দেখতে না পেয়ে সে-ও অস্থির। মৃত্যু বোঝার বয়স হয়নি। বাবা আসছে না কেন, তা তাকে বোঝানো যাচ্ছে না। কান্নাকাটি করছে। বাধ্য হয়ে রবিবার বিকেলে তাকে বাইকে চাপিয়ে ঘুরিয়ে এনেছেন জেঠা শঙ্কর। কান্নাকাটি করছে তাঁর দুই মেয়েও।

শম্পার আট বছরের বড় মেয়ে রাতে বাবার সঙ্গেই থাকছে। ছোট মেয়ে থাকছে ঠাকুমা সন্ধ্যা রায়ের কাছে। কান্নাকাটি করছে। সন্ধ্যা বলেন, “বিভীষণ ঢুকেছিল ঘরে। এখন তার দাম দিচ্ছি।” প্রসেনজিতের বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ বলেন, “আমাদের বাড়িতে সুকান্ত কত সম্মান পেয়েছে। সে আমার ছেলেকে খুন করতে পারল?” পূজা শুধু বলেন, ‘‘ওরা আমার জীবনটা শেষ করে দিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Wife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE