জালে-জড়িয়ে: পাখিদের মৃত্যু মিছিল। বহরমপুরের সাটুইতে। নিজস্ব চিত্র
বর্ষায় টইটুম্বুর জলা। খাল-বিল পুকুর এক হয়ে গিয়েছে। পুকুরের মাছ যাতে ভেসে না যায় সে জন্য সার দিয়ে বেছানো হয়েছে জাল। আর, মাছের খোঁজে এসে, নাইলনের সেই জালে আটকে যাচ্ছে মাছরাঙা, ক্যাটেল ইগ্রেট, হেরন প্রজাতির বক পানকৌড়ি। মশারির মতো সেই জালে মাছির মতো ধরা পড়ে ছটফট করে মারা যাচ্ছে একের পর এক মাছ-চরা পাখি। বহরমপুরের সাটুই অঞ্চলে পাখিদের এই অসহায় মৃত্যু মিছিল দেখে এলাকায় প্রচার শুরু করেছে বন দফতর। এগিয়ে এসেছেন পক্ষী-প্রেমীরাও। তবে সে ডাকে সাড়া মিলছে এমন নজির নেই। সাটুই অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান সুব্রত সিংহ বলেন, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বর্ষার মুখে এমনটা প্রায়ই হয়। এটা রুখতে সবরকম ব্যূবস্থা নেওয়া হবে।’’
পক্ষীপ্রেমী সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, “ঘুড়ির মাঞ্জায় মানুষের মাথা পর্যন্ত কেটে যায়। আর সারা দিনে সামান্য কয়েকটি মাছ বাঁচাকে এমন জাল বিছিয়ে দেওয়ায় প্রতি দিন মারা যাচ্ছে আমাদের রাজ্য পাখি মাছরাঙা থেকে পানকৌড়িরা।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই এ ব্যাপারে আপত্তি আছে। তাঁরা বলছেন, চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখলে শিউরে ওঠেন। কিন্তু তাঁদের আপত্তির কথা শুনছে কে! ভরতপুর এলাকার কোড়িয়া অঞ্চলের এক মাছ চাষি তাপস ঘোষ বলেন, “পৃথীবিতে বেঁচে থাকার অধিকার সবার আছে। একটা পাখি যখন মাছ ধরে তখন অন্যান্য মাছ দ্রুত অন্য দিকে পালিয়ে যায়। এতে মাছের ঘাটতি হওয়ার কোনও কারণ নেই।” আয়েশবাগের মাছচাষি তাপস ভট্ট বলেন, “পুকুরে কডের সুতো ঝুলিয়ে দিলে পাখিরা ভয় পেয়ে বসতেও পারে না, তাই আটকে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। তা বলে জাল বিছিয়ে পাখি নিধন একেবারেই উচিত নয়।” বনদফতরের রেঞ্জ অফিসার অমিতাভ পাল বলছেন, “এর আগে বিভিন্ন এলাকায় এ ব্যপারে সচেতনতার প্রচার করেছি আমরা। বহু জায়গায় গিয়ে জাল কেটেও দেওয়া হয়েছে। আমরা মৎস্য দফতরকেও অনুরোধ করেছি তারাও যদি একটু উদ্যোগ নেয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy