প্রতীকী ছবি।
অপেক্ষা ছিলই, লকডাউন শিথিল হতেই এ বার ফেরার তোড়জোড় শুরু হল। লকডাউনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হতেই, নিজের গ্রামে ফেরার জন্য মরিয়া ছিলেন জেলার যে সব পরিযায়ী শ্রমিক, ‘আনলক’-এর প্রথম পর্বে তাঁদের সিংহভাগই ফের মুর্শিদাবাদ থেকে পা বাড়িয়ে ফেললেন ভিন রাজ্যে। যাঁদের অধিকাংশেরই এক রা— ‘‘এখানে আয় কোথায়, পেটের দায়ে ভিনপ্রদেশে পাড়ি দেওয়া ছাড়া উপায় কী!’’
ট্রেন চলাচল কবে স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না। অগত্যা বাস ভাড়া করেই তাঁরা দলে দলে ফিরছেন কর্মস্থলে। বুধবার, বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে উপচে পড়া ভিড় সে কথাই বলছে। রোদ উপেক্ষা করে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে, বাসে উঠে জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে স্বজন-পরিবারকে হাত নেড়ে তাঁরা জানিয়ে যাচ্ছেন, ‘গ্রামে কাজ কোথায়!’ করোনা ঠেকাতে, ভিন রাজ্য ফেরত পরিযায়ীদের কোয়রান্টিনে রেখে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, তাঁদের বাড়িতে নিয়মিত রেশন পৌঁছে দেওয়া, একশো দিনের কাজে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া— জেলা প্রশাসনের অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি নেই। তবে, নওদার আলিমুদ্দিন শেখ থেকে ডোমকলের আতাবুদ্দিন আলি, সকলেরই এক যুক্তি, বাড়তি আয়ের চেষ্টায় ফের পরবাসে যাওয়া ছাড়া তাঁদের গতি নেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে মাস্ক-হীন অবস্থায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে তাঁদের ফিরে যাওয়া যে সংক্রমণের সম্ভাবনা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে, মেনে নিচ্ছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ বাসে এমন গাদাগাদি করে চলাচল করলে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’’ সে কথা জানেন পরিযায়ীরাও। বহরমপুর মোহনা বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা ভগবানগোলার রাকিবুল শেখ কিংবা লালগোলার শরিফ বিশ্বাস, তাই অকপটেই বলছেন, ‘‘লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ ছিল। এখন কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত না ফিরলে কাজের সুযোগটাই না হারাই। এই বাজারে সেটা কে আর চায় বলুন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy