Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিসিকেভি-তে হামলা, ধর্না তুলতে ঢুকল গুন্ডারা মনিরুল শেখ হরিণঘাটা

বিবাদের সূত্রপাত গত ৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রছাত্রীদের আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে না-যাওয়া নিয়ে তৃণমূল অনুগামী কিছু ছাত্রের সঙ্গে বাকিদের বিবাদ হয়। এর পরেই ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান তুলে কিছু ছাত্রছাত্রী ধর্নায় বসেন।

বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়।

বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়।

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

রাতে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে ধর্নায় বসা ছাত্রদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে, যদিও তারা তা উড়িয়ে দিয়েছে।

নদিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ বেশ কিছু দুষ্কৃতী ক্যাম্পাসের আশপাশে জড়ো হয়। অনেকেরই মুখ ছিল ঢাকা, হাতে লাঠি-সোটা-মুগুর। সেই সময়ে কিছু আন্দোলনকারী ছাত্রী পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে লেডিজ় হস্টেলে কিছু ছাত্রী সাধারণ সভা (জিবি) করছিলেন। কেউ এক জন হস্টেলের গেট খুলে দেয়। দুষ্কৃতীদের একটা দল ঢুকে পড়ে ছাত্রীদের উপরে চড়াও হয়। তাঁদের মারধর করা হয়।

দুষ্কৃতীদের আর একটা দল চলে যায় প্রশাসনিক ভবনে, যেখানে গত কয়েক দিন টানা ধর্না চালাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। এক ছাত্রকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোনও। কিছু ছাত্রছাত্রীরা ভবনের ফাঁকফোকর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে গিয়ে তাঁদের চড়-ঘুসি, লাঠির বাড়ি মারতে থাকে দুষ্কৃতীরা। প্রায় চল্লিশ মিনিট তাণ্ডব চালানোর পরে দুষ্কৃতীরা মেন গেট দিয়ে বেরিয়ে চলে যায়। গুরুতর আহত কয়েক জন ছাত্রকে জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিবাদের সূত্রপাত গত ৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রছাত্রীদের আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে না-যাওয়া নিয়ে তৃণমূল অনুগামী কিছু ছাত্রের সঙ্গে বাকিদের বিবাদ হয়। এর পরেই ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান তুলে কিছু ছাত্রছাত্রী ধর্নায় বসেন। উপাচার্যও তাঁদের সঙ্গে থেকে গিয়ে সারারাত বোঝান‌োর চেষ্টা করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তা গোলমালে ইন্ধন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলে ওই ছাত্রছাত্রীরা ধর্না থেকে সরেননি। বৃহস্পতিবার থেকে অনশনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন তাঁরা।

মঙ্গলবার আন্দোলনকারী ছাত্রদের কয়েক জনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ। কিন্তু তাঁর কথাতেও আন্দোলন থেকে সরতে রাজি হননি ছাত্রেরা। তাই কি এই হামলা? চঞ্চল অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বাইরে থেকে কেউ ওখানে মারপিট করতে যায়নি। যে ছাত্রেরা আন্দোলনের বিরোধী, তারাই ওদের মেরেছে।’’

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, এই অবস্থায় দলের কয়েক জন নেতা ঠিক করে ফেলেন, মেরে ধর্না তুলে দেওয়া হবে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ মোহনপুর ও জাগুলির কয়েক জন নেতা পাকা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই দুষ্কৃতীদের একটা দল ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। হরিণঘাটা শহরের টিএমসিপি নেতা রাকেশ পাড়ুইয়ের নেতৃত্বেই হামলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও তা উড়িয়ে দিয়ে রাকেশ বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের উল্টো দিকেই আমার বাড়ি। আমায় তো গেটের সামনে দেখা যাবেই!’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধরণীধর পাত্র বলেন, ‘‘আমি পুলিশের সব স্তরে ফ্যাক্স করে আমি গন্ডগোলের কথা জানিয়েছি।’’ বারবার চেষ্টা করা হলেও নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার ফোন ধরেননি। আন্দোলনকারী মিলনকুমার লক্ষ্মণ বলেন, ‘‘যে ভাবে বহিরাগত গুন্ডাদের ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে মারধর করা হল, তা অভাবনীয়। কিন্তু এই ভাবে আমাদের দমানো
যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BCKV Sit In Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE