দু’টি গাড়ি নিয়ে ভোর রাতে বাড়িতে হানা দিয়েছিল গরুচোরেরা। গোয়ালে ঢুকে পাঁচটি গরু নিয়ে তারা যে শুধু চম্পট দিয়েছে তা নয়, পালানোর সময়ে রাস্তায় টহল দেওয়া তিন সিভিক ভলান্টিয়ার তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে গাড়ির ধাক্কায় তাঁদের রাস্তার পাশের ঢালু জায়গায় ফেলে দেয় চোরেরা। তার পর গরু নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালায়।
আহত তিন জনকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। কিন্তু পুলিশকে যে বিষয়টি ভাবাচ্ছে তা হল, পায়রাডাঙা এলাকায় গরুচুরির এই রকম চক্রের আচমকা আনাগোনা। গরু পাচারের জন্য নদিয়ার যে অঞ্চলগুলি কুখ্যাত তার মধ্যে কোনও দিনই পায়রাডাঙা ছিল না। সীমান্তও এখান থেকে অনেক দূরে। নদিয়ার তেহট্ট , মুরুটিয়া, হোগলবেড়িয়া, বগুলা, হাঁসখালি, চাপড়া-র মতো জায়গাগুলি থেকে প্রথম থেকেই গরুপাচার হয়। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাও গরুপাচারের তালিকায় রয়েছে। তাই পায়রাডাঙায় একেবারে গৃহস্থ বাড়ির গোয়ালে ঢুকে একাধিক গরু তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেককে চমকে দিয়েছে। পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিজয়েন্দু বিশ্বাস বলেন, “মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গরু পাচারকারীরা এ বার একে –একে অনেকের বাড়ি হানা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’’ আবার অনেকে মনে করছেন, সীমান্ত দিয়ে পাচারের জন্য নয়, গরু চুরি করা হয়েছে কাছাকাছি গরুর হাটে বিক্রির জন্য। পায়রাডাঙার কাছে গরুর হাট বলতে তাহেরপুরের বীরনগর আর হরিণঘাটার বিরহী। পুলিশ ঘটনা খতিয়ে দেখছে। গরুচোরদের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে।
রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের পায়রাডাঙার উদয়পুর গ্রামে রানাঘাট-কল্যাণী বাইপাসের ধারে বাড়ি প্রসেনজিৎ চৌধুরীর। তিনি কৃষিকাজ করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর বাড়িতেই হানা দিয়েছিল গরুচোরেরা। বাড়ির লোক তখন ঘুমোচ্ছিলেন। দু’টি গাড়ি গোয়ালের কাছে রাখা হয়েছিল। গরুগুলিকে গাড়িতে তোলার সময়ে বাড়ির সামনে দিয়ে আনাজ নিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন এক কৃষক। তিনিই দৌড়ে কিছুটা দূরে ডিউটিরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিষয়টি তাদের জানান। সঙ্গে সঙ্গে একটি মোটর বাইকে চোরেদের গাড়ির পিছু ধাওয়া করেন পাপন মণ্ডল, সুশান্ত বর্মন এবং শানু মণ্ডল নামে তিন সিভিক ভলান্টিয়ার। তখনই চোরেদের দু’টি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়ি তাঁদের মোটরবাইকের পিছনে ধাক্কা মারে। রাস্তার পাশে ছিটকে পড়েন তিন জন।
আহত সিভিক ভলান্টিয়ারদের অন্যতম সুশান্ত বর্মন বলেন, “আমরা রানাঘাট থানায় কাজ করি। ভেবেছিলাম থানায় ফোন করে বিষয়টি জানাব। সেখান থেকে ফোর্স এসে ওদের ধরবে। তার আগেই ওদের গাড়ি আমাদের ধাক্কা মারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy