Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মোমো এল কান্দিতে, অভিযোগ

মেহেরুল আলম নামে এক যুবক বলছেন, “আমার কাছে ওই গেম খেলার মেসেজ আসার পরেই থানায় যোগাযোগ করি। তবে যে নম্বর থেকে মেসেজ এসেছিল, সেটি খুঁজে পাইনি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

বেলডাঙার পর কান্দি। মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে উঠল মোমো খেলার নিশি-ডাক। বুধবার কান্দি আর তার লাগোয়া এলাকায় অন্তত পাঁচ জনের মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’ গেম খেলার মেসেজ এসেছে বলে অভিযোগ।

খড়গ্রামের চাঁদসিপাড়ার বাসিন্দা মিজারুল শেখের দাবি, এ দিন সকালে তিনি কান্দি পুরসভায় মেয়ের জন্মের শংসাপত্র নিতে গিয়েছিলেন। ফোনটা বেজে ওঠে তখনই। হোয়াটস্অ্যাপ খুলতেই বুক কেঁপে ওঠে তাঁর— ছোট্ট মেসেজ, তাতে পরিস্কার ‘চ্যালেঞ্জ’ উড়ে এসেছে, এস মোমো খেলি!

মিজারুল জানান, মেসেজে লেখা, ‘আমি মোমো। আপনার মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে’। পুরসভায় কয়েক জনের সঙ্গে পরামর্শ করে সটান হাজির হন কান্দি থানায়। অভিযোগ করার পাশাপাশি যে নম্বর থেকে ওই মেসেজ এসেছিল, সেটিও পুলিশকে দিয়েছেন তিনি। কান্দি থানার আইসি সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। নম্বরটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

গত বছর ‘ব্লু হোয়েল গেম’ নিয়ে উত্তাল হয়েছিল দেশ। পৃথিবীর আনাচ কানাচ থেকেও নীল তিমির আতঙ্কের কথা আসছিল অনর্গল। খবরের কাগজের পাতা ওল্টালেই নিত্য চো‌খে পড়ত, ব্লু হোয়েল খেলে নির্দ্ধিদায় আত্মহননের রাস্তা বেছে নিয়েছেন কোনও তরুণ কিংবা কিশোর।

কান্দির চার যুবকও এ দিন ‘মোমো চ্যালেঞ্জে’র মেসেজ পান। মেহেরুল আলম নামে এক যুবক বলছেন, “আমার কাছে ওই গেম খেলার মেসেজ আসার পরেই থানায় যোগাযোগ করি। তবে যে নম্বর থেকে মেসেজ এসেছিল, সেটি খুঁজে পাইনি।’’ পাঁচ জনের মধ্যে রাজু শেখ নামে এক যুবক মেসেজের উত্তর দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘মোমো গেম সম্পর্কে কিছুই জানি না। কিছুটা কৌতূহলের বশে পাল্টা মেসেজ করেছিলাম। আমাকে নিজের ঠোঁট কেটে রক্তাক্ত মুখের ছবি তুলে পাঠাতে বলা হল। তারপরই ভয় পেয়ে নম্বরটা ব্লক করে দিয়েছি।’’ এই আনাবশ্যক আগ্রহটাই অনেকের ক্ষেত্রে কাল হয়ে ওঠে— মনে করছেন সমাজতত্ত্ববিদেরা।

প্রাথমিক মর্ষকাম থেকে তা ক্রমশ আত্মহননের দিকে ঠেলে দেয় সাধারণ মধ্যমেধার ছেলেমেয়েদের। অনেকেই মাঝ পথে ভয় পেয়ে খেলা বন্ধ করে দিতে চাইলে তাদের পরিজনদের ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি আসতে থাকে। দুর্বল মনের মানুষ সেই ভয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সাইবার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আদতে এই ধরনের খেলার আড়ালে রয়েছে বেটিং চক্রের প্রচ্ছন্ন ছায়া। খেলতে খেলতে মানুষটি কোন পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যাবে, নিভৃতে বেটিং চলে তা নিয়েই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

MOMO West Bengal Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE