Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

ত্রিশূলে গাঁথা পড়ছে পাথরবাহী ট্রাক!

তবে সেই প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, বৃহস্পতিবারও দেখা মিলল তোলাবাজদের।

এই কুপনই ধরানো হচ্ছে।

এই কুপনই ধরানো হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আহিরণ শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০০:৩৭
Share: Save:

ঝাড়খণ্ডের প্রবেশ দ্বারে ‘ত্রিশূলে’ গাঁথা পড়ছে পণ্যবাহী ট্রাক!

সুতি এবং ফরাক্কায় দিনে দুপুরে একের পর এক মালবাহী ট্রাক আটকে চালকের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটা কুপন, লালকালিতে যার উপরে ঝলমল করছে একটি ত্রিশূল। সঙ্গে অভয়বাণী, কুপন দেখালেই রাস্তায় আর কোথাও পুলিশ ধরবে না। বিনিময়ে ট্রাক চালককে দরদস্তুরের পরে দিতে হচ্ছে কখনও হাজার কখনও বা দু’হাজার টাকা। সুতি-ফরাক্কা সড়কে ঝাড়খণ্ডমুখী পাথরবোঝাই ট্রাকের কাছে এমনই তোলাবাজির নিত্য রমরমা।

টাকা দিতে না চাইলে রয়েছে মোক্ষম হুঁশিয়ারি, ‘পুলিশে ধরিয়ে দেব!’ আর দিলে কুপন ধরিয়ে অভয়বাণী! বেওয়া সড়কের লালঘর এলাকাতেও একই ধরনের হুমকি এবং হুঁশিয়ারি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এজারত আলি নিজেও তা স্বীকার করেছেন, “টোকেন দিয়ে তোলা আদায় হচ্ছে, ট্রাক পিছু হাজার-দু’হাজার লকডাউনে রুজির এ এক নয়া রাস্তা যেন!’’ তোলাবাজির খপ্পরে পড়া দু’টি রাস্তাই ঝাড়খণ্ডগামী। দুটি রাস্তা দিয়েই চলে অন্তত কয়েক হাজার ট্রাক। ঝাড়খণ্ড থেকে আসে পাথর। এ দিক থেকে অন্য সামগ্রী নিয়ে ফিরে যায়।

কাদের এমন দৌরাত্ম্য? ট্রাক চালকেরা বলছেন, “এ নিয়ে কিছু বললে রাস্তা দিয়ে আর পাথর নিয়ে ট্রাক চালাতে পারব না। তাই দরদস্তুর করে টাকা দিয়ে দেওয়াই ভাল!’’ এই পথ দিয়েই নিয়মিত আসা যাওয়া সুতির প্রাক্তন বিধায়ক জানে আলম মিঞার। তিনি নিজেও যে এমন কাণ্ড দেখছেন নিত্য, মেনে নিয়েছেন। বলছেন, ‘‘প্রকাশ্যে এই তোলাবাজি চলছে। আমার মতো অনেকেই তা দেখছেন। তবে, আশ্চর্য কারও কোনও হুঁশ নেই।” ট্রাক চালকেরা বলছেন, প্রতিবাদ করলে ফল যে মেলে না সে অভিজ্ঞতা তাঁদের রয়েছে। এক ট্রাক সচালকের কথায়, ‘‘টাকা না দিলে সত্যিই যে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, তা থেকে স্পষ্ট এই কারবারের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের যোগসাজশ রয়েছে।’’ জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ওয়াই রঘুবংশী অবশ্য মনে করেন, এর সঙ্গে পুলিশের কোনও যোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কারণ দেখিয়েই তোলা আদায় করা যায় না। আমি নিজে খোঁজ নিচ্ছি। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তবে সেই প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, বৃহস্পতিবারও দেখা মিলল তোলাবাজদের। জাতীয় সড়কের উপরেই ট্রাক থামিয়ে টোকেন বা কুপন এগিয়ে দিল দুই যুবক। কুপনের নিচে গাড়ির নম্বর আর তারিখ লিখে টাকা পকেটে গুঁজেই ছেড়ে দিল তারা। সঙ্গে ফাউ, সেই অভয়বাণী— পুলিশ আর ধরবে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Transport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE