স্কুলে কর্মশালা: নবগ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
নতুন বছরে ক্লাস শুরু হয়েছে। নবগ্রামের সিঙ্গার হাইস্কুলের ক্লাস ফাইভে বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মণ্ডল। নতুন ছাত্রছাত্রীদের বলেছিলেন, ‘‘তোমরা সবাই বিজ্ঞান বানান লিখে দেখাও দেখি!’’ কয়েক জন পড়ুয়া ঠিক বানান লিখেছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর লেখা বানানের বহর দেখে চমকে গিয়েছিলেন সঞ্জয়বাবু। শুধু ‘বিজ্ঞান’ বানানই নয়, যুক্তবর্ণ কিংবা বাক্য লিখতে গিয়ে তাদের কলম ভাঙার জোগাড়।
শুধু ওই বিজ্ঞান ক্লাসেই নয়, অন্য বিষয়েও তাদের অবস্থা তথৈবচ। ক্লাস নিতে গিয়ে এক শিক্ষক তো এক দিন বলেই ফেলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ রে, প্রাইমারিতে কি তোরা কিছুই শিখিসনি?’’ এমন ছবি শুধু এই স্কুলেই নয়, জেলার বহু স্কুল পঞ্চম শ্রেণির বেশ কিছু পড়ুয়াদের নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তবে, ছাত্রছাত্রীদের কেন এমন দশা, তার উত্তর খুঁজে তাদের গুণগতমান ঠিক করতে এক দিনের কর্মশালার আয়োজন করা হল নবগ্রাম শিঙ্গার হাইস্কুলে। এমনিতেই নবগ্রাম সমস্ত দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়া এলাকা। একটা সময় স্কুলছুটের সমস্যা ছিল। সরকারি নানা প্রকল্পের ফলে এখন তা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কমেছে। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার গুণগত মান। এ দিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দফতরের প্রাক্তন এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের গুণগত মান খারাপের নেপথ্যে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব। সঙ্গে অন্য কারণও রয়েছে। সেগুলি নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। এবং যে সব সমস্যা রয়েছে, সেগুলি সবাই মিলে সমাধান করা হবে। মাস ছয়েকের মধ্যেই পরিবর্তনটা লক্ষ করা যাবে।’’
এ দিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন নবগ্রামের আরও কুড়িটি এসএসকে, এমএসকে ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা। উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক ও পড়ুয়ারাও। প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক ছাত্রছাত্রী পঞ্চম শ্রেণিতে উঠে পড়ে। কিন্তু তাদের বহু বিষয়ে ঘাটতি থাকে। সেই ঘাটতি পূরণ করতেণই এই পদক্ষেপ। প্রতি মাসেই এই কর্মশালার আয়োজন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy