ঘুম ছুটেছে পুরসভার।
মাঝেমধ্যেই পুরকর্তারা ছুটছেন শহরের হোটেল, রেস্তরাঁয়। সটান তাঁরা ঢুকে পড়ছেন হেঁশেলে। ফ্রিজ খুলে দেখছেন মাছ-মাংসের হাল। পারিষদদের কেউ এক জন বলছেন, ‘‘ও দাদা, দেখে যান, খাবারের উপরে কেমন দোল খাচ্ছে ঝুল!’’ ছোট্ট ভিড়টা ছুটছে সেদিকে।
এ দিকে, হোটেল-রেস্তরাঁর মালিক, কর্মীরা আপ্রাণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরে নদিয়া-মুর্শিদাবাদেও শুরু হয়েছে তৎপরতা। অথচ এত দিন নদিয়া-মুর্শিদাবাদের জেলা সদর ছাড়াও বহু এলাকাতেই কলকাতার নামী বেশ কিছু বিরিয়ানি দোকানের নাম দিয়ে ফুটপাতেই রমরমিয়ে চলেছে বহু কাউন্টার। সস্তায় উড়ে গিয়েছে প্লেটের পর প্লেট বিরিয়ানি।
তবে সম্প্রতি পুরসভার এই তৎপরতায় খুশি এলাকার লোকজন। তাঁরা বলছেন, ‘‘এত দিন যা হয়েছে, হয়েছে। এ বার যদি পুরসভার নজরদারিতে খাঁটি খাবার মেলে তা হলে তো ভালই।’’
সম্প্রতি কৃষ্ণনগর, বহরমপুর, জঙ্গিপুরের পরে এ বার হোটেল-রেস্তরাঁ অভিযান শুরু করেছে নবদ্বীপ পুরসভাও। জেলার খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে শহরের বিভিন্ন হোটেল, রেস্তরাঁ, দই, সসের কারখানায় অভিযান চালাল নবদ্বীপ পুরসভা।
নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “চারদিকে খাবারদাবার নিয়ে নানা রকম কথা শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা খাবার তৈরি এবং পরিবেশন করছেন, শহরের নাগরিকদের স্বার্থে সেগুলো এক বার দেখার দরকার ছিল। খাদ্যসামগ্রীতে কোথাও তেমন কিছু মেলেনি। তবে বেশ কিছু হোটেল, রেস্তরাঁর রান্নাঘর অস্বাস্থ্যকর, পরিচ্ছন্ন নয়। সেগুলো দ্রুত ঠিক করতে বলা হয়েছে।”
অভিযানে কোথাও দেখা গিয়েছে, সন্ধ্যায় পরিবেশনের জন্য স্যালাড কাটা হয়ে গিয়েছে দুপুরেই। কোথাও এই গরমেও ঘি এতটাই শক্ত যে, শিশি থেকে বের করাই যায়নি। কপালিপাড়ায় দই তৈরি কারখানায় ঢুকেই দেখা গিয়েছে, রাস্তার ধারে থরে থরে সাজানো মুখখোলা লালদই। ব্যস্ত রাস্তার গাড়িঘোড়ার ধুলো এসে পড়ছে তাতে।
খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক অসিতকুমার রায় বলেন, “এক হাঁড়ি দই নমুনা হিসাবে পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। রিপোর্টের পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুরসভা যা করছে সেটা প্রশংসনীয়। তবে অকারণে যেন কাউকে হেনস্থা হতে না হয়, সেটাও দেখা দরকার। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলছেন, ‘‘কাউকে হেনস্থা করার জন্য এই অভিযান নয়। আমরা চাই, মানুষ যেন পয়সা দিয়ে খাঁটি ও স্বাস্থ্যকর জিনিস পান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy