Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সভাধিপতি রিক্তাই, সঙ্গী হলেন দীপক

যেমনটা ভাবা গিয়েছিল, তা-ই হল। সর্বসম্মতি ক্রমে নদিয়ার জেলা সভাধিপতি হলেন রিক্তা কুন্ডুই। আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় আগাগোড়া তাঁর নামটাই সামনে আসছিল।

পার্থের সঙ্গে রিক্তা। নিজস্ব চিত্র

পার্থের সঙ্গে রিক্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
Share: Save:

যেমনটা ভাবা গিয়েছিল, তা-ই হল। সর্বসম্মতি ক্রমে নদিয়ার জেলা সভাধিপতি হলেন রিক্তা কুন্ডুই। আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় আগাগোড়া তাঁর নামটাই সামনে আসছিল।

আরও কিছু নাম যে ভাসছিল না, তা নয়। কিন্তু যত সময় গিয়েছে ততই সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন ও পার বাংলা থেকে ছিন্নমূল হয়ে চলে আসা উদ্বাস্তু পরিবারের মেয়ে, ফুলিয়ার রিক্তা। শনিবার দুপুরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, তৃণমূলের গোড়ার দিন থেকে দলের কাজ করে আসা রিক্তাকে সব সদস্যই বেছে নিয়েছেন। বস্তুত রিক্তাই সেই নেত্রী যিনি ফুলিয়ার মূক-বধির ও দৃষ্টিহীন ‘ধর্ষিত’ তরুণীকে নিয়ে গিয়েছিলেন দলনেত্রীর কাছে। যাঁকে সঙ্গে নিয়ে মহাকরণে ধর্ণায় বসেছিলেন সে দিনের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়।

গত বার বাণীকুমার রায়কে জেলা সভাধিপতির জায়গা ছাড়তে গিয়ে যাঁকে নেত্রীর নির্দেশে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল, সেই দীপক বসু হয়েছেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। আর এই জোড়া নির্বাচনের সঙ্গেই পুরোপুরি অবসান হল মুকল জমানার। কেননা মুকুল রায় জেলা পর্যবেক্ষক থাকাকালীন অনেকে তাঁর অনুগামী হয়ে উঠলেও এই দু’জন একান্ত ভাবে নেত্রীর একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। অনেকেই মনে করেন, মুকুলের ‘নিজের লোক’ লোক না হওয়াতেই ২০১৩ সালে সভাধিপতির দৌড়ে এগিয়ে থেকেও শেষে পিছু হটতে হয়েছিল তাঁকে।

রিক্তার এই চুড়োয় উঠে আসার পথটা কিন্তু মসৃণ ছিল না। প্রথমে সংরক্ষণের ধাক্কায় তাঁর গত বারের জেতা আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায়। কোথায় দাঁড়াবেন, আদৌ কোনও জায়গা তিনি পাবেন কি না তা নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। শেষমেশ শান্তিপুরের একটা আসনে তাঁর ঠাঁই হয়। কিন্তু অন্য আসনে দাঁড়িয়ে জিতে আসার পরেও উঠে আসতে থাকে একাধিক ‘হেভিওয়েট’ সদস্যের নাম। তৃণমূল সূত্রের দাবি, পরিস্থিতি বুঝে পোড় খাওয়া নেত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ঘনিষ্ঠ হতে থাকেন বর্তমান জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তর। আর তাতেই দরজা খোলে।

কানাঘুসো অবশ্য চলছিলই। এরই মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর সভাপতি ও সহ-সভাপতি বাছাই নিয়ে দলের বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পার্থ। জেলা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই জানান, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা তাঁরা মেনে নেবেন। চিত্রনাট্য তৈরিই ছিল। বিধায়কেরা রিক্তার নাম প্রস্তাব করেন। পার্থ জানিয়ে যান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নেত্রী। তার পরে এ দিন বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্যদের সামনে তিনি জানিয়ে দেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। অনেকেরই ধারণা, মুকুল রায় যখন বিজেপির হয়ে জেলা সংগঠনে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন, রিক্তা-দীপক জুটিকে সামনে রেখে বিশ্বস্ততাকে অগ্রাধিকার দিলেন মমতা। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে এই বার্তা গুরুত্বপূর্ণ বইকী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE