প্রতিবাদ সভায় অধীর। নিজস্ব চিত্র
অধীর আছে অধীরেই! সদ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ চলে যাওয়ার পরেও বিক্ষোভ-আন্দোলনে তাঁর ‘জুড়ি’ মেলা যে ভার, সে কথা শনিবার ফের প্রমাণ করলেন অধীর চৌধুরী। দুগ্ধচাষিদের সমর্থনে বহরমপুরে পঞ্চাননতলা মোড়ের কাছে ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সংস্থার কার্যালয়ের সামনে এ দিনের বিক্ষোভ সভায় হাজির ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ। অধীর বলেন, ‘‘জেলার হাজার হাজার দুগ্ধচাষি তাঁদের শ্রম দিয়ে গড়ে তোলেন ভাগীরথী দুগ্ধ উৎপাদক সমবায় সমিতি। লাভজনক ওই ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সংস্থা ২০১২ সালের পর থেকে ধুঁকতে শুরু করেছে, তেমনি রাজ্য সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ ও পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্তের কারণে জেলার দুগ্ধচাষিরা বর্তমানে বিপন্ন।’’ অবিলম্বে দুগ্ধ উৎপাদকদের দুধের ক্রয়মুল্য বাড়ানো ও উৎসবের আগে বোনাস ও ইনসেনটিভ বাড়ানোর দাবি জানান অধীর।
ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সমিতিকে চাঙ্গা করার জন্য রাজ্য সরকার এক জন ‘স্পেশাল অফিসার’ নিয়োগ করে। কিন্তু তাঁকে সম্প্রতি সরিয়ে দিয়ে রাজ্য সরকার ভাগীরথীর দায়িত্বভার তুলে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের উপরে। কিন্তু তার পরেও আর্থিক দিক থেকে দুগ্ধচাষিরা লাভবান হননি বলে অভিযোগ। জেলার দুগ্ধচাষিদের ন্যায্য দাবি মানা না হলে ফের তিনি সাইকেলে চড়ে রাজভবন অভিযান করবেন বলেও এ দিন অধীর হুমকি দেন। পাশাপাশি ভাগীরথী দুগ্ধচাষিদের জন্য সব ধরণের আন্দোলন করার কথাও তিনি জানান। অধীরের অভিযোগ, ‘‘২০১২ সাল থেকে ওই সমবায় সমিতির কোন সাধারন সভা ডাকা হয়নি। এছাড়া ভাগীরথী সমবায় সমিতি যখন কংগ্রেসে দখলে ছিল, সেই আমলে লাভজনক সংস্থা হিসেবে ব্যাঙ্কে ভাগীরথীর ২০ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট ছিল। সে টাকার কোনও হিসেব নেই।’’ ওই আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ দিনের বিক্ষোভ সভায় অধীর চৌধুরী ছাড়াও বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ও জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বক্তব্য রাখেন। পরে সভা শেষে অধীর চৌধুরী যান বহরমপুর শহর লাগোয়া হরিদাসমাটি পঞ্চায়েতের অযোধ্যানগরে। সেখানে নিজের সাংসদ এলাকা উন্নয়ন খাতের ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি রাস্তার শিলান্যাস করেন তিনি। অধীর জানান, একটা আদর্শ নিয়ে তিনি রাজনীতি করেন। তাঁর কোনও দিনই পদের মোহ ছিল না। সর্বভারতীয় নেতৃত্ব চেয়েছিলেন তাই তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছিলেন। রেল-দফতরের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার জন্যও তিনি কারও কাছে দরবার করেননি। দল চেয়েছিল বলেই তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন। অধীর বলছেন, ‘‘তাই উন্নয়নের স্বার্থে কিংবা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব। পদে যখন ছিলাম না, তখনও রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছি। পদে থাকা অবস্থাতেও গোটা রাজ্য ঘুরে আন্দোলন করেছি। পদে না থাকলেও যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলনে আমি কংগ্রেস কর্মীদের পাশে থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy