Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চেতনা ফিরতেই স্টেশনে ঝাঁপাল কিশোর

দু’টো লোক, একটা রুমাল আর ঝাঁঝালো গন্ধ। ব্যাস, এর বেশি আর কিছু মনে করতে পারছে না ষষ্ঠ শ্রেণির পলাশ চৌধুরি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিমুরালি শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১২
Share: Save:

দু’টো লোক, একটা রুমাল আর ঝাঁঝালো গন্ধ। ব্যাস, এর বেশি আর কিছু মনে করতে পারছে না ষষ্ঠ শ্রেণির পলাশ চৌধুরি। কাঁচরাপাড়ার সিঁথি বাজার এলাকার বাসিন্দা পলাশ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। তাঁকে অজ্ঞান করে কোথাও পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তার বাড়ির লোকের। জ্ঞান ফিরতেই নদিয়ার শিমুরালিতে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ মারে সে। সোমবারের দুপুরের ঘটনা।

আপাতত সে কাঁচরাপাড়ার রেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পুরো ঘটনায় চরম আতঙ্কিত সে। শারীরিক কোনও সমস্যা না থাকলেও তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পলাশের বাবা নবীন চৌধুরি বীজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে পলাশের দাবি সত্য, নাকি অন্য কিছু ঘটেছিল, তা-ও যাচাই করবে পুলিশ।

নবীনবাবু পেশায় রেলকর্মী। পলাশ স্থানীয় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র। তার দাদা প্রীতম-ও একই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। নবীনবাবু জানান, সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ তিনি বাড়িতে ফেরেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রীতম ও পলাশ সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। তার পর থেকে পলাশের আর খোঁজ মেলেনি।

বেশ কিছুক্ষণ পরে প্রীতম বাড়ি ফেরে। তখন সে দেখে, বাড়ির কাছে রাস্তার উপরে পলাশের সাইকেল পড়ে রয়েছে। তার পর থেকে পলাশকে খোঁজাখুজি শুরু করেন বাড়ির লেকেরা। কিন্তু, কোথাও তার সন্ধান মেলেনি। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ শিমুরালির এক বাসনের দোকানদার তাঁকে ফোন করে জানান যে, পলাশ তাঁর দোকানে রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধারের পর পলাশ তাদের জানিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরনোর পরে দু’জন লোক এসে তার সঙ্গে কথা বলে। তাকে বলে, ‘‘তোর বাবা তোকে ডাকছে।’’ সে জানায়, তার বাবা তো ঘরে রয়েছে। অচেনা দু’জন বলে, ‘‘তুই জানিস না এখনই বেরিয়েছে তোর বাবা। ও দিকে আছে। চল তোকে ডাকছে।’’

পলাশ জানিয়েছে, সে রাস্তার উল্টো দিকে মুখ ঘোরাতেই তার নাকে রুমাল চেপে ধরে কেউ। তাতে ঝাঁঝাল গন্ধ ছিল। তার পরে তার আর কিছু মনে নেই। আচমকা ট্রেনের বাঁশির শব্দে তার জ্ঞান ফেরে। দেখে ট্রেনের কামরার গেটের পাশে বসে রয়েছে সে। ট্রেন ছাড়তেই আচমকা লাইনে ঝাঁপ মারে সে। তাতে সে সামান্য চোটও পায়।

শিমুরালি রেলস্টেশনের একটি দোকানে সে সব জানায়। সে-ই দোকানদার ফোন করে ঘটনাটি জানান নবীনকে। শিমুরালিতে নবীনের কয়েক জন পরিচিত থাকেন। তাঁদের ফোন করে বিষয়টি জানান তিনি। তাঁর পরিচিতেরা পলাশকে নিজেদের কাছে রাখেন। সন্ধ্যায় তাকে কাঁচরাপাড়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কে এমন করতে পারে? নবীন বলেন, ‘‘কয়েক জনের সঙ্গে আমার বনাবনি না থাকলেও, ছেলেকে তারা তুলে নিয়ে যাবে আমি বিশ্বাস করি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abduction Kidnapping Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE