কামরার নীচ থেকে আগুনের ফুলকি আর ধোঁয়া বেরোতে থাকায় মাঝপথেই দাঁড়িয়ে গেল ডাউন লালগোলা প্যাসেঞ্জার। যাত্রীরা আতঙ্কিত। শনিবার দুপুরে, নদিয়ার ধুবুলিয়া স্টেশনের কাছে ওই ঘটনায় অবশ্য কেউ হতাহত হননি। তবে কিছু সময়ের জন্য ওই শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
রেল ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টা নাগাদ ধুবুলিয়া স্টেশনে ঢুকছিল শিয়ালদহগামী লালগোলা প্যাসেঞ্জার। মুড়াগাছা স্টেশন পার করে ট্রেনটি ধুবুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল। স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে শান্তিনগর এলাকায় চালকের কামরার পরের পণ্যবাহী কামরার নীচ থেকে ফুলকি ও ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। যাত্রীরা চিৎকার করতে থাকেন। ট্রেন থামিয়ে চালক ও সহকারী চালক নিজেদের অগ্নিনির্বাপক দিয়ে ফুলকি এবং ধোঁয়া আগুন আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেন। মিনিট পঁচিশের চেষ্টায় তাঁরাই ধোঁয়া আয়ত্তে আনেন। ১২টা ২৫ নাগাদ ট্রেনটিকে ধুবুলিয়া স্টেশনে নিয়ে যাওয়া। সেখানে আগেই দমকল এসে গিয়েছিল। তাদের সাহায্যেই আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়। দুপুর ১টা ৫ নাগাদ ট্রেনটি ফের শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা দেয়।
প্রকাশ চক্রবর্তী নামে এক যাত্রী বলেন, “ধুবুলিয়া স্টেশনে ঢোকার আগেই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে গেল। আমি ছিলাম পিছনের দিকে। দেখি, ট্রেনের চালক ও গার্ড ছোটাছুটি করছেন। তখনই শুনলাম কামরা নীচ থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। অনেক যাত্রী আগুনের আতঙ্কে সেখানেই ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। প্রায় এক ঘণ্টা পরে ট্রেনটি ফের রওনা দেয়।”
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। বাতিল হয়নি কোনও ট্রেনও। তবে লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখায় কিছু ট্রেন দেরিতে চলেছে। কী কারণে কামরার নীচ থেকে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া বেরোল, তা-ও স্পষ্ট নয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা স্পষ্ট নয় এখনো। তদন্ত করে দেখা হবে।”
বহরমপুর রেলওয়ে প্রোগ্রেসিভ যাত্রী সেবা সমিতির সভাপতি মলয়ককুমার বণিক জানাচ্ছেন, যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় উপেক্ষিত। রেল চলছে তাই চালানো হচ্ছে। যে কোনও দিন বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে বার বার পূর্ব রেল দফতররের আধিকারিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তাঁরা নির্বিকার। মলয়বাবুর অভিযোগ, অন্য ডিভিশনের পরিত্যক্ত ট্রেনের ইঞ্জিন ও কামরা এই রুটে চালানো হচ্ছে।
বেলডাঙার সুরজিৎ ভৌমিক এ দিন ট্রেনে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন। সুরজিৎ বলছেন, ‘‘ধুবুলিয়া ঢোকার একটু আগে ট্রেনে হইচই শুরু হয়। অনেকে ভয়ে ট্রেন থেকে নেমেও পড়েন। রেলের উচিত, যাত্রী সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখা।’’
বেলডাঙার বেগুনবাড়ির মহম্মদ ওয়াসেফুজ্জামান স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন। তিনি বলছেন, ‘‘প্রথমে একটা পোড়া গন্ধ পাচ্ছিলাম। পরে বিষয়টি জানতে পারি। প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy