ক্যাম্প ঘেরাও বাসিন্দাদের। ইনসেটে, শরিফ শেখ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
ছেলের মৃত্যুতে মাঝেমধ্যেই সংজ্ঞা হারাচ্ছেন আদরি বিবি। জ্ঞান ফিরলে বিড়বিড় করছেন, ‘‘বাড়িতে শৌচাগার থাকলে এ সব হত না! বাড়িতে শৌচাগার থাকলে শরিফ এ ভাবে চলে যেত না।’’
মঙ্গলবার গভীর রাতে রঘুনাথগঞ্জের মোমিনটোলায় দু’জনকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। মোমিনটোলার বাসিন্দা শরিফ শেখ (১৭) দশম শ্রেণির পড়ুয়া। চাঁদ শেখ (৩৭) পাশের হাজিপুরের বাসিন্দা। তবে ওই দু’জনের পরিবারের তরফে বুধবার রাত পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। বিএসএফ অবশ্য পিটিয়ে মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ দিন স্থানীয় লোকজন বিএসএফের ক্যাম্প ঘেরাও করেন।
শরিফের মা আদরি বিবির দাবি, বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় রাত জেগে পড়ছিল ছেলে। তার পরে শৌচ করতে বাড়ির বাইরে বের হয়। তখনই বিএসএফের জওয়ানরা ওকে নিয়ে গিয়ে মারে। আদরির আক্ষেপ, “স্বামী রাজমিস্ত্রি। বাইরে থাকে। এ বার ভেবেছিলাম সরকার থেকে না দিলে নিজেরাই যে ভাবে হোক শৌচাগার গড়ব। কিন্তু তার আগেই শৌচাগারের জন্যই যে এ ভাবে ছেলেটাকে চলে যেত হল।” অভিযোগ, শুধু আদরির বাড়িতেই নয়, এখনও অনেক বাড়িতে শৌচাগার নেই। গ্রামের জাহির শেখ বলছেন, ‘‘শৌচাগার নেই আমার বাড়িতেও। তাই পদ্মার পাড়ই ভরসা।’’
মুর্শিদাবাদকে নির্মল জেলা করতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রশাসন। প্রচার, ফ্লেক্স, ফেস্টুন, উৎসাহ, সচেতনতা, সংবর্ধনার কোনও খামতি নেই। কিন্তু তার পরেও সমস্ত বাড়িতে এখনও শৌচাগার হয়নি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গ্রামেই মুদির দোকান হায়দার আলির। অনেকেই যে এখনও শৌচ করতে পদ্মাপাড়ে ছোটেন তা মানছেন তিনিও। তবে তিনি বলছেন, ‘‘আসলে শৌচাগার থাকলেও তা ব্যবহার করার অভ্যেস নেই অনেকেরই। তাঁরাও তাই মাঠে ছোটেন।
প্রায় হাজার তিনেক বাসিন্দার গ্রাম মোমিনটোলায় চারটি সংসদ। রঘুনাথগঞ্জ ২ বিডিও বিশ্বজিৎ মজুমদার বলছেন, “মোমিনটোলায় শৌচাগার রয়েছে ৯৫ শতাংশ বাড়িতে। বাকিরা ব্যবহার করেন প্রতিবেশীদের শৌচাগার। ওই ছেলেটির বাড়িতে কেন শৌচাগার নেই তা খবর নিয়ে দেখব। এ রকম পরিবার থাকলে সরকারি ভাবে তাদের অবশ্যই সাহায্য করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy