Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নজরবন্দি পড়ুয়ারা

কামাইয়ে দাওয়াই, স্কুলে বায়োমেট্রিক

দশম শ্রেণির পুনকাবতি খাতুন সারা বছরে স্কুলে এসেছে সাকুল্যে ৯ দিন। ওই ক্লাসের পড়ুয়া সুজন আখতার সারা বছরে এসেছে মাত্র ৪৩ দিন। পরীক্ষার সময় এমন অনেকেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা ক্লাসের শিক্ষকের কাছে গিয়ে উপস্থিতি বাড়াতে ঘ্যান ঘ্যান করে।

—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৪
Share: Save:

দশম শ্রেণির পুনকাবতি খাতুন সারা বছরে স্কুলে এসেছে সাকুল্যে ৯ দিন। ওই ক্লাসের পড়ুয়া সুজন আখতার সারা বছরে এসেছে মাত্র ৪৩ দিন। পরীক্ষার সময় এমন অনেকেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা ক্লাসের শিক্ষকের কাছে গিয়ে উপস্থিতি বাড়াতে ঘ্যান ঘ্যান করে। আবার কেউ কেউ একটু এগিয়ে বিদ্যালয়ে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়ে উপস্থিত হয়।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবার খোঁজ নিয়ে দেখেছেন পড়ুয়ারা যে স্কুলে কম এসেছে তা অভিভাবকেরাও জানেন না। তাই পড়ুয়াদের নিয়মিত বিদ্যালয়মুখী করতে এ বার বায়োমেট্রিক উপস্থিতি চালু করল স্কুল। শুক্রবার বিকালে বহরমপুরের হিকমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বহরমপুরের বিডিও রাজর্ষি নাথ পড়ুয়াদের বায়োমেট্রিক উপস্থিতির উদ্বোধন করেছেন। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের বায়োমেট্রিক উপস্থিতি শুরু হল। আগামী দিনে বাকি ক্লাসগুলিতেও একইভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতেই উপস্থিতির হার দেখা হবে। বছরে গড়ে ১৯০ দিন ক্লাস হয়। সেখানে অন্ততপক্ষে ১১৪ দিন স্কুলে উপস্থিত থাকার কথা। কিন্ত অনেক স্কুলে দেখা যায় অনেক পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের নিচে।

এ ভাবে কি উপস্থিতি বাড়বে? বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, পড়ুয়ারা এখন ভয়েই স্কুলে নিয়মিত আসবে। স্কুলে এসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বায়োমেট্রিক মেশিনে হাজিরার জন্য আঙুলের ছাপ দিতে হবে। ফলে কেউ হেলতে-দুলতে দেরি করে বিদ্যালয়ে এলে ধরা পড়বে, তেমনি তাড়াতাড়ি চলে গেলেও ধরা পড়বে। ওই সব পড়ুয়াদের দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এক শিক্ষক জানান, অনেক সময় অভিভাবকেরা স্কুলে এসে বলেন, ‘আমার ছেলে বিদ্যালয়ে এসেছে। আপনাদের হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে।’ এখন এই ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।

শিক্ষাদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের নিচে হলেই মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পড়ুয়ারা বসার সুযোগ পায় না। পরীক্ষার সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপস্থিতি কমের জন্য পরীক্ষায় বসতে দিতে না চাইলে অভিভাবক থেকে পড়ুয়া বিদ্যালয়ে চলে আসে। উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নানান মহল থেকে অনুরোধ আসে। বায়োমেট্রিক উপস্থিতি চালু হলে সেই অনুরোধ এড়ানোর সুযোগ থাকবে।

হিকমপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সময় মতো বিদ্যালয়ে যাতয়াত করেন। কিন্তু পডুয়াদের অনিয়মিত যাতায়াতের কারণে শিক্ষায় বিদ্যালয় কাঙ্খিত মানে পৌঁছতে পারছে না। তাই এই উদ্যোগ।’’ বহরমপুরের সৈদাবাদে মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপিঠের প্রধান শিক্ষক জসীমউদ্দিন আহমেদ প্রশংসা করে বলেন, ‘‘উদ্যোগটা অবশ্যই ভাল। এটা সব স্কুলে শুরু হলেই অনেক সমস্যার সমাধান হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampur School বহরমপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE