—ফাইল চিত্র।
কোথাও, হাসপাতাল অনেক দূরের এক স্বপ্ন-বাড়ি! কোথাও বা গ্রামের অগম্য রাস্তা কিংবা হাসপাতালের পথে ভয়াল নদী— প্রসূতিদের সেই ঠিকানায় পৌঁছোন তাই এখনও এক লড়াই।
যার নিট ফল, সন্তান প্রসবের জন্য বাড়ির সূতুকাঘরই শ্রেয় বলে মেনে নেওয়া। সরকারি হিসেব অবশ্য বলছে, এখনও জেলার ৫ শতাংশেরও বেশি প্রসূতি দাইমার ভরসায় রয়েছেন। বাড়িতেই সন্তান প্রসব কমানোর জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন জেলার ৬টি জায়গায় নতুন ‘ডেলিভারি পয়েন্ট’ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে ৬টি জায়গায় কমপক্ষে ১২ জন চিকিৎসক না আসা পর্যন্ত সেগুলি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ৮৯ হাজার ২৭৬ জন সন্তান জন্ম নিয়েছে। তার মধ্যে ৮৪ হাজার ২৮৭ জন শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব করেছে। ৪ হাজার ৯৮৯ জন শিশু বাড়িতে প্রসব হয়েছে। শতাংশের হারে ৯৪.৮৪ শতাংশ শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জন্ম নিয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৬৩ হাজার ২৮৭ জন এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২১ হাজার ৩৯০ জন জন্ম নিয়েছে। বাড়িতে সন্তান প্রসব কমাতে স্বাস্থ্য তথ্য পর্যালোচনা করে দেখেছে, জেলার বেশ কিছু অঞ্চল হাসপাতাল থেকে দূরবর্তী এলাকায় হওয়ায় এবং প্রত্যন্ত এলাকার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে অসুবিধা হয়। ফলে ৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন ‘ডেলিভারি পয়েন্ট’ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১০২ এর অ্যাম্বুল্যান্স কিভাবে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রসূতি নিয়ে হাসপাতালে দ্রুত আসতে পারে তার ম্যাপিং চলছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ বছর হিসেব বলছে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ ব্লকে সব থেকে বেশি প্রসূতি বাড়িতে সন্তান প্রসব করে। ওই ব্লকে এবছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১০৪১ জন সন্তান বাড়িতে প্রসব করেছে। এই ব্লকের দোগাছি, ভাসাইপাইকর, মালঞ্চ, চাচণ্ডা ও নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সব বাড়িতে সন্তান প্রসবের হার সব থেকে বেশি। সুতি ১ ব্লকে ৪০২ জন সন্তান প্রসব করেছে। এই ব্লকের বৈষ্ণবডাঙা ও হারোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতে বাড়িতে সন্তান প্রসবের হার বেশি। সাগরদিঘি ব্লকে ১৮০ জন, সুতি ২ ব্লকে ৭৩৪ জন, ফরাক্কায় ৮০৬ জন সন্তান বাড়িতে জন্ম নিয়েছে। খড়গ্রাম ব্লকে ৫৪ জন, রানিনগর ২ ব্লকে ২৫ জন, বড়ঞা ব্লকে ৩০ জন সন্তান বাড়িতে জন্ম নিয়েছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাড়িতে সন্তান বন্ধ করার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রস্তাবিত ‘ডেলিভারি পয়েন্টের’ জন্য আমরা রাজ্যে চিকিৎসক চেয়েছি। রাজ্য থেকে চিকিৎসক দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy