বছরের পর বছর ধরে এরা পিছিয়েই আছে। মাধ্যমিক বা উচ্চ-মাধ্যমিকের ফলাফল বের হলে কেউই কোনও দিন এখানে খোঁজ নেন না। কারণ সকলেই যেন ধরে নিয়েছেন, এই সব স্কুলের পড়ুয়ারা কোনও দিনই ভাল নম্বর পেতে পারে না। এই স্কুলগুলি কোনও দিন উঠে আসতে পারে না সেরার তালিকায়। জেলার সেই সব পিছিয়ে পড়া স্কুলকেই এ বার দত্তক নিতে চলেছেন নদিয়া জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ভিতরে পিছিয়ে পরা স্কুলগুলির মধ্যে থেকে প্রাথমিক ভাবে একশোটি স্কুলকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। এগুলির হাল ফেরানো এবং পঠনপাঠনকে উন্নীত করার দায়িত্ব জেলা থেকে শুরু করে ব্লক স্তরের একশো জন আধিকারিকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। সেই স্কুলকে সেরার তালিকায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করবেন তিনি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলবেন। আলোচনার মাধ্যমে সব সিদ্ধান্ত নেবেন। এবং সময়-সময় জেলা প্রশাসনকে জানাবেন।
তাঁর প্রস্তাবমতো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। স্কুলের বাড়তি ঘর তৈরি করতে হলে, শৌচাগার সংস্কারে, কম্পিউটর বা ল্যাবরেটরিতে কোনও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হলে, গ্রন্থাগারে রেফারেন্স বই দরকার হলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জেলা প্রশাসনকে জানাবেন। আধিকারিক যদি মনে করেন,‘শ্রুতি দৃশ্য মাধ্যম’ হিসাবে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে পাঠ্যসূচি-ভিত্তিক অ্যনিমেশন সিডি দরকার, তা হলে সে সবও দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “দত্তক নেওয়ার মাধ্যমে স্কুলের প্রতিদিনের কাজকর্ম ও পড়াশোনার অগ্রগতির উপর আধিকারিকেরা নজর রাখবেন। প্রতিদিন সব ক্লাস ঠিকঠাক নেওয়া হচ্ছে কিনা, ছাত্রছাত্রীরা পড়া কতটা বুঝছে, সবই দেখা হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘প্রধান উদ্দেশ্যই হল, পঠনপাঠনের মান উন্নয়ন। পড়াকে ছেলেমেয়েদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা এবং পড়ার উপযোগী পরিবেশ ও পরিকাঠামো তৈরি করা। এই ভাবে পিছিয়ে পরা স্কুলগুলিও ধীরে ধীরে উন্নত হতে বাধ্য।”
শুধু হাইস্কুল নয়, দত্তকের তালিকায় থাকবে প্রাথমিক স্কুলও। পিছিয়ে পরা স্কুল গুলিকে চিহ্নিত করতে ‘বেস লাইন সার্ভে’ করে একশোটি স্কুল বাছা হয়েছে। স্কুল পরিদর্শকদের পাশাপাশি এসআইদেরও রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, প্রত্যেক অধিকারিক চাইবেন, তাঁর দায়িত্বে থাকা স্কুল সবচেয়ে ভাল করুক।
আর এই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা’র পরিবেশে পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলির সার্বিক ভাবে উন্নতি হবে। সমগ্র শিক্ষা অভিযানের জেলা প্রকল্প আধিকারিক আজমল হোসেন বলছেন, “আমরা চাইছি শিক্ষার সার্বিক বিকাশ। জেলার প্রত্যন্ত এলাকার পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলির সমস্যার কারণ গুলিকে চিহ্নিত করে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। যাতে সেখানকার পড়ুয়ারাও এগিয়ে যাওয়া স্কুলের পড়ুয়াদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy