পুনরায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পরে তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্ত তাঁর প্রথম সভা করলেন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া সংলগ্ন নদিয়ার রথতলা এলাকায়। কিন্তু কেন কাঁচরাপাড়ার কাছাকাছি সভা করল তৃণমূল?
রবিবার বিকেলে জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্করবাবু তাঁর বক্তব্য শুরুই করলেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে। তিনি বললেন, ‘‘কাঁচরাপাড়ায় সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ের বাড়ি। এই এলাকায় যেন তৃণমূলের কোনও ক্ষতি বিজেপি করতে না পারে তাঁর জন্যই এ সভা।’’
শহর ও কল্যাণী ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভার মূল সুরই ছিল মুকুল বিরোধিতা। ঘণ্টা দুয়েকের এই সভায় বক্তারা কোনও রাখঢাক না রেখেই সরাসরি মুকুল রায়ের বিরোধিতা করেন। জেলা মহিলা তৃণমূলের সভাপতি তথা চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ তাঁর বক্তব্যে নাম না করে মুকুলকে দ্বিতীয় মিরজাফর বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কাঁচরাপাড়ার এক ব্যক্তি তৃণমূলের সঙ্গ ছেড়ে দিেয় বিজেপির হাত ধরেছেন। সেই ব্যক্তি জঘন্য ও নোংরা।’’ রত্নাদেবীর পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘দুই জেলার সীমান্তবর্তী রথতলায় এক শ্রেণির মানুষ ছিদ্র খুজে চলেছেন। ঠিক যেমন, কালসাপ লখিন্দরের বাসর ঘরের ছিদ্র খুজেছিল। রথতলার ওই ছিদ্রান্বেষী সাপের মাথা থেতলে দেবে শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় ও স্থানীয় কাউন্সিলর।’’
দিন কয়েক আগেই বিজেপির শ্রমিক মোর্চার নেতা সজল দে-কে ভিনরাজ্য থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রথতলার বাসিন্দা সজল বছর আড়াই আগে তৃণমূলে ছিলেন। তিনি তৃণমূলের শহর কল্যাণীর সভাপতি অরূপবাবুর বিরোধী শিবিরের লোক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। সজলের সঙ্গে মুকুলের যোগাযোগ ছিল বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। শহরের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, রথতলা এলাকায় সজলের প্রভাব ছিল। তাঁর সঙ্গে এলাকার বেশ কিছু যুবককে ঘুরতে দেখা যেত। সজল এখন জেলে। কিন্তু সজলের অনুগামীদের একটা বার্তা দিতেই তৃণমূল এ দিন রথতলায় সভা করল। গৌরীশঙ্করবাবুও তাঁর বক্তব্যে সজল প্রসঙ্গের অবতারণা করেন। তিনি বলেন, ‘‘সজল সমাজবিরোধী। তাঁর ওর ঠাঁই হয়েছে সংশোধনাগারে।’’ গৌরী এ দিন মুকুল রায়কে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মুকুল রায়ের চেয়ে বড় অসৎ চরিত্রের মানুষ ইদানীং চোখে পড়ে না।’’ সভার শেষ বক্তা কল্যাণীর বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসও মুকুলের সমালোচনা করেন।
নদিয়া (দক্ষিণ) বিজেপি সভাপতি জগন্নাথ সরকার এ দিনের সভা প্রসঙ্গে বলেন, রথতলায় মুকুলদার প্রভাব আছে। সজলেরও লোক রয়েছে। এলাকার লোকজন অচিরেই তৃণমূলের সঙ্গ ছাড়বে, এই ভয় থেকে গৌরীশঙ্কর দত্ত এ দিন সভা করলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy