Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশি ভয়ে ঘরে খিল, পুরুষশূন্য স্বরূপপুর

গ্রামে পুলিশ পিকেট বসেছে। এদিন পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে স্বরূপপুরে যান স্থানীয় বিধায়ক নিয়ামত শেখ-সহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

পুলিশের উপর হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও অভিযুক্তেরা কেউ গ্রেফতার হয়নি। অভিযুক্তদের ধরতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে হরিহরপাড়ার স্বরূপপুর গ্রামে দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। গ্রেফতারি এড়াতে শুক্রবার ওই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ বাড়ি ছেড়েছেন। গোটা গ্রাম কার্যত খাঁ-খাঁ করছে।

গ্রামে পুলিশ পিকেট বসেছে। এদিন পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে স্বরূপপুরে যান স্থানীয় বিধায়ক নিয়ামত শেখ-সহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। তাঁরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি, পুলিশের কাছেও তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। পরে বিধায়ক বলেন, ‘‘যারা দোষী তাদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুক পুলিশ। কিন্তু গ্রামের যারা নিরীহ মানুষ তাদের বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করা হোক।’’ তবে এ দিন এলাকায় মাইক নিয়ে পুলিশ নিরীহ মানুষদের ঘরে ফেরার আবেদন করেছে।

খলিলাবাদে দইপড়া দিয়ে ক্যানসার সারানোর কথা বলে আমজাদ শেখ নামে এক ব্যক্তি যে বুজরুকি চালাচ্ছিলেন, মঙ্গলবার তা বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ। তার প্রতিবাদেই বৃহস্পতিবার স্বরূপপুর গ্রামের একদল বাসিন্দা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন। পুলিশ অবরোধ তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হয়। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটে হরিহরপাড়ার ওসি আব্দুস সালাম শেখ-সহ ১০ জন পুলিশকর্মী আহত হন। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আহত ওসিকে বৃহস্পতিবার বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এদিন সকালে সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, হামলার ঘটনায় এফআইআরে ২৭ জনের নাম রয়েছে প্রাথমিক ভাবে। তবে এই ঘটনায় ওই গ্রামের আরও কিছু ব্যক্তি জড়িত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে, এমনই আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। এদিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে নিরীহ ব্যক্তিদের হেনস্থার অভিযোগ তুলছেন গ্রামবাসীরা। ওই গ্রামের বাসিন্দা জুলেহার বিবি, মমতাজ বেগমরা বলেন, ‘‘পুলিশ রাতবিরেতে হানা দিচ্ছে। তাদের ভয়ে গ্রামের পুরুষরা ইতিমধ্যেই বাড়ি ছেড়েছে। যারা দোষ করেছে, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক। কিন্তু নিরীহ লোক কেন ভুগবে!’’

এ দিন স্বরূপপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তাঘাট সুনসান। এলাকার সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। অঘোষিত বন‌্ধের চেহারা নিয়েছে এলাকা। স্বরূপপুর থেকে চার কিমি দূরের খলিলাবাদ ফের স্বাভাবিক চেহারায় ফিরছে। তবে আমজাদ শেখ পরিবার-সহ বেপাত্তা। ‘বুজরুকি’র ঘটনা চলার সময় বিক্রিবাটার আশায় ওই গ্রামের অনেক বাসিন্দাই অস্থায়ী দোকানপাট খুলে বসেছিলেন। রোগীর আনাগোনা বন্ধ হতে নিজ নিজ পেশায় ফিরছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE