কৃষ্ণনগরে সস্ত্রীক পুলিশকর্মী খুনের ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে চার দিন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, তদন্তেও বিশেষ এগোতে পারেনি সিআইডি। মঙ্গলবার গভীর রাতে কৃষ্ণনগরে পালপাড়ার সেই ঘটনার পর থেকে একাধিক প্রশ্নের উত্তর পেতে হিমসিম খাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
বুধবার সিআইডির একটি দল এসে হাতের ছাপ ও ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছিল। ফরেন্সিক বিভাগের লোকজনও এসে নানা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। সিআইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘সে সব পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। কিন্তু এই প্রশ্নটা আমাদের ভাবাচ্ছে। কারণ এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল, দুই ঘরে এত রক্তপাত ঘটল। অথচ দেওয়ালে, দরজায় কোথাও রক্ত লেগে থাকতে দেখা গেল না। সারা বাড়িতে রক্ত লাগা পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি।’’
তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, রমাপ্রসাদবাবুকে যদি আর্থিক বা অন্য কোনও শত্রুতার কারণে খুন করার দরকার হত তাহলে বাড়ির ভিতরে অত কষ্ট করে ঢোকার প্রয়োজন হত না। সে ক্ষেত্রে রাস্তাই ছিল সব থেকে নিরাপদ জায়গা। বেশির ভাগ দিনই রমাপ্রসাদবাবু সাইকেলে যাতায়াত করতেন। বাড়ি ফিরতেন রাত এগারোটা-সাড়ে এগারোটা নাগাদ।
রমাপ্রসাদবাবু যে রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরতেন বেলেডাঙা থেকে পালপাড়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পর্যন্ত সেই রাস্তা রাত ন’টা সাড়ে ন’টার পর থেকেই ফাঁকা হয়ে হয়ে যায়। ফলে দুষ্কৃতীরা তো অনায়াসে সেই রাস্তাতেই খুন করে বেরিয়ে যেতে পারত। সেটা না করে এত ঝুঁকি নিতে গেল কেন দুষ্কৃতীরা? সে প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছে সিআইডি।
তদন্ত নেমে সিআইডি জানতে পেরেছে যে, বাড়ির পিছনের জমির গাছপালা ভাঙা। কুকুরও এই এলাকা দিয়েই এগিয়েও গিয়েছিল। গোয়েন্দাদের ধারণা, নিরাপদে কাজ সেরে দুষ্কৃতীরা ওই জমির উপর দিয়ে গিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠেছিল। সম্ভবত সেখান থেকেই গাড়ি করে তারা দ্রুত এলাকা ছাড়ে। সিআইডির ওই কর্তা বলেন, ‘‘একবার ভেবে দেখুন, বাড়িতে তিন জন। তার মধ্যে ছেলেকে দরজা বন্ধ করে ‘অপারেশন’ চালিয়ে দু’জনকে নৃশংস ভাবে খুন করা হল। সব কিছু তছনছ করে জানালা গলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেল। অথচ তিন তলাতেই শুয়ে থাকা ১৫ বছরের ছেলেকে কিছুই বলল না।’’ গোয়েন্দাদের যুক্তি, দুষ্কৃতীদের সাধারণত এমনটা করে না। কারণ পুলিশকর্মীর ওই ছেলে কোনও কারণে জেগে গেলে কিংবা বিপদের কথা বুঝতে পারলে সহজেই মোবাইলে পুলিশ অথবা ঘনিষ্ঠদের খবর দিতে পারত। সেই পথটা দুষ্কৃতীরা কেন ফাঁকা রাখল? প্রশ্নের পর প্রশ্ন। যার একটিরও এখনও পর্যন্ত কোনও সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy