Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

তুচ্ছ বচসা থেকে জোড়া বোমা, সুতিতে খুন যুবক

চায়ের দোকান বন্ধ করা নিয়ে শুরু হয়েছিল বচসা। আর তুচ্ছ সেই ঘটনা শেষ হল দু’টো বোমা বিস্ফোরণে। ঘটনাস্থলেই মারা যান চায়ের দোকানের মালিকের ছেলে নাসিম শেখ (২২)। গুরুতর জখম হয়েছে অভিযুক্ত রামিজ শেখও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিমান হাজরা
সুতি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

চায়ের দোকান বন্ধ করা নিয়ে শুরু হয়েছিল বচসা। আর তুচ্ছ সেই ঘটনা শেষ হল দু’টো বোমা বিস্ফোরণে। ঘটনাস্থলেই মারা যান চায়ের দোকানের মালিকের ছেলে নাসিম শেখ (২২)। গুরুতর জখম হয়েছে অভিযুক্ত রামিজ শেখও। বুধবার রাতে সুতির সুলতানপুরের ওই ঘটনার পরে পুলিশ রামিজকে গ্রেফতার করেছে। রামিজ বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চায়ের দোকানে আড্ডা চলছিল। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় নাসিম জানান, তিনি দোকান বন্ধ করবেন। তা নিয়েই বচসা শুরু হয় রামিজের সঙ্গে। অভিযোগ, এর পরেই নাজিম দু’টো বোমা নিয়ে আসে। একটা বোমা ছোড়ে দোকানের পাশে। প্রচণ্ড শব্দে তা ফেটে যায়। দ্বিতীয় বোমাটি সে চেপে ধরে নাসিমের মাথায়। ঘটনাস্থলেই নাসিম মারা যান। রামিজেরও ডান হাতের অর্ধেক ছিঁড়ে যায়।

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সামান্য বচসা থেকে এই ঘটনা। অভিযুক্ত যুবকের ডান হাতের অনেকটাই উড়ে গিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত পুলিশ হেফাজতে তার চিকিৎসা চলছে।”

তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মুর্শিদাবাদে গন্ডগোল কিংবা খুন নতুন কোনও ঘটনা নয়। শম্ভুনগরে বেড়া টপকে মুরগি চলে গিয়েছিল পড়শির বাড়িতে। তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে মুরগির পায়ে চোট লাগে। সেই নিয়ে খুন হন এক জন। নসিপুরেও এক বাড়ির মুরগি গিয়ে ডিম পেড়েছিল পাশের বাড়িতে। তা নিয়েও তুলকালাম। শেষতক খুন। বিশ্বাসপাড়ায় নলকূপের জল কোন দিক দিয়ে যাবে তা নিয়েও গণ্ডগোলের জেরে খুনের ঘটনা ঘটে। কুপিলাতেও জমির আলে পড়া এক সজনে গাছের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে খুন হন এক প্রৌঢ়। সেই তালিকায় এ বার জুড়ে গেল সুতির সুলতানপুরও।

সুলতানপুরের মোড় বেশ জমজমাট এলাকা। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে ভিড় থাকে। সেখানেই চায়ের দোকান চালান নাসিমের বাবা নূর ইসলাম। তাঁর বাড়ি কাছেই চোহতপুর গ্রামে। সেই চায়ের দোকানেই সকাল থেকে আড্ডা দেন এলাকার লোকজন। বেচাকেনাও মন্দ হয় না। বুধবার ইদ ছিল বলে সন্ধের পরেই রাস্তা ঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে। দোকান ছেড়ে তাই সন্ধের পরেই বাড়ি চলে যান চায়ের নূর ইসলাম। ছেলে নাসিম শেখ দোকানে ছিলেন।

নাসিমের দাদু নজরুল ইসলাম জানান, চায়ের দোকানের পাশেই আড্ডা দিচ্ছিল রামিজ। রামিজের সঙ্গে দোকানের পাশেই স্থানীয় এক যুবকের ঝগড়া শুরু হয় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ। আশপাশের লোকজন সে ঝগড়া থামিয়ে দিলে রামিজ গিয়ে বসে চায়ের দোকানের বেঞ্চে। নাসিমও এ সব দেখেশুনে দোকান গোটাতে শুরু করেন। রামিজকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।

অভিযোগ, এরপরেই রামিজ হম্বিতম্বি শুরু করে। দোকান ছেড়ে দৌড়ে রামিজ তার বাড়ির দিকে ছুটে যায়। মিনিট দু’য়েকের মধ্যে ফের চায়ের দোকানে ফিরে আসে সে। তখন তার দু’হাতে দুটো তাজা বোমা। নাসিমের এক আত্মীয় হাসিম খান বলেন, “বোমার শব্দে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় চায়ের দোকানের পাশে পড়ে রয়েছে নাসিম। একটু দূরেই পড়ে আছে রামিজ।’’ সুতি থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দু’জনকেই উদ্ধার করে। রামিজকে হাসপাতালে পাঠায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE