প্রতীকী ছবি।
করোনা যুদ্ধে এ বার সংক্রমিত হচ্ছেন জেলা প্রশাসনের পদস্থ অফিসারেরাও।
শুক্রবার লকডাউনের আবহের মধ্যেই সংবাদ আসে, সংক্রমিত হয়েছেন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে থাকা এক অফিসার। সঙ্গে-সঙ্গে নিভৃতবাসে যেতে বাধ্য হয়েছেন একাধিক আধিকারিক-সহ ১৫ জন, যাঁরা ওই অফিসারের সংস্পর্শে এসেছিলেন নানা সময়ে। সোমবার তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হবে। এঁদের কেউ কেউ আবার করোনা মোকাবিলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে কঠিন সঙ্কটের মধ্যে জেলা প্রশাসনিক ভবন।
এর আগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক কর্তা আক্রান্ত হলেও তিনি বাড়িতে ছিলেন। তার সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনের কোনও যোগ ছিল না। এই ভবনেই জেলাশাসক এবং তিন অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেম্বার। প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের আধিকারিকেরা বসেন এই ভবনেই। গোটা জেলা থেকে প্রতি দিন শ’য়ে শয়ে’ মানুষ আসেন। ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
এর উপরে যদি করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা কোন আধিকারিকের কেউ সংক্রমিত হলে পরিস্থিতি জটিলতর হবে। তা ছাড়া পঞ্চায়েত দফতর ও নাজিরাখানার দায়িত্বে থাকা ওই অফিসার কী ভাবে সংক্রমিত হলেন, তা স্পষ্ট নয়। সেটাও বাড়তি ভয়ের কথা।
শুধু প্রশাসনিক ভবন নয়, করোনা থাবা বসিয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরেও। সেখানে ‘কোয়ালিটি অ্যাশিওর্যান্স সেল’-এর দায়িত্বে থাকা এক কর্মীও সংক্রমিত হয়েছেন। এর আগে একাধিক চিকিৎসক আক্রান্ত হলেও খোদ স্বাস্থ্য দফতরে সংকেরমণ ছড়ায়নি। ওই কর্মীর সংস্পর্শে আসা কর্মী ও আধিকারিকদের শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। ভয়ের কথা হল, ওই কর্মীকে দফতরের প্রায় সর্বত্রই যাতায়াত করতে হত। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অমূলক নয়। এর আগে প্রসূতি বিভাগের এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর সংস্পর্শে এসে নিভৃতবাসে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রায় সমস্ত কর্তাই। কিন্তু সেটা ছিল গোড়ার দিকের কথা, এখন সার্বিক পরিস্থিতি অনেক বেশি জটিল এবং প্রতিকূল। এই কঠিন সময়ে নিভৃতবাসে যেতে হলে ঘরবন্দি কর্তারা কতটা সামাল দিতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এতেই শেষ নয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় ‘মাতৃসদন’-এও উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে স্টোররে দায়িত্বে থাকা এক কর্মীর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলেও দফতর সূত্রের খবর। যদিও তাঁর সংস্পর্শে আসা পাঁচ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে জেলা প্রশাসনিক ভবনের পাশাপাশি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরেও সোমবার লালারস পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরাই আসছেন, তাঁদের সকলেরই লালারস পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হবে।”
সম্ভবত এ দিনই ছিল আপাতত রাজ্যের শেষ সার্বিক লকডাউন। সকাল থেকেই লকডাউন সফল করতে রাস্তায় নামে পুলিশ। জেলাস্তরের কর্তাদের পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও সক্রিয় ভাবে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। তবে অনেককেই সামান্য কারণে রাস্তার বেরিয়েওছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন অমান্য করায় শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই পর্যন্ত রানাঘাট পুলিশ জেলায় গ্রেফতার হন ২২ জন, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy