খান পাঁচেক ক্লাস-ঘর। ২২৬ জন পড়ুয়া। তাদের দিনভর সোল্লাস। থামাবে কে? এ ঘর থেকে ও ঘর, ছুটে ছুটে সামাল দিচ্ছেন নামমাত্র পার্শ্বশিক্ষিকা, ‘‘এই চুপ, চুপ করলি করলি, না হলে কিন্তু...’’। না হলে অবশ্য কিছুই হয় না। ছেলেমেয়েরা চেঁচাতে থাকে। চুপ করে যান দিদিমণি।
আশপাশের খান পাঁচেক গ্রামের ছেলেমেয়েদের সবেধন ভরসা ইসলামপুরের সীমান্ত ঘেঁষা দৌলতপুর প্রাথমিক বিদ্যালযে ক্ষোভটা বেঙে পড়ল শনিবার।
উত্তেজিত অভিভাবকেরা স্কুল ঘেরাও করে পড়ুয়াদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হল্লা জুড়ে দেন— এটা কি স্কুল না গোয়াল!
তাঁদের দাবি, এ বাবে পড়াশোনা হয়, ক্লাস নেওয়া তো দূরস্থান, ওই এক মাত্র শিক্ষিকাকে মিডডে মিল থেকে স্কুলের অন্যান্য সব কাজই করতে হয়। এমন স্কুল না চালিয়ে তুলে দেওয়া হোক, না হলে নিয়োগ করা হোক শিক্ষক।
স্কুল সূত্রের খবর, দেড় মাস আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দ হালদার বদলি হয়েছেন অন্য স্কুলে। তার পর থেকে স্কুলে নতুন কোনও শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ হয়নি। তার পর থেকেই এই দুরবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দা দ্বিজেন মন্ডল বলছেন,"স্কুলে আমার ছেলে রয়েছে। মাস খানেক ধরে দেখছি স্কুল ছুটি হওয়ার আগেই সে বাড়ি চলে আসে। কেন? জিজ্ঞেস করায় বলল, স্কুলে কেউ নেই।’’
শিক্ষিকা রেখা মন্ডল বিশ্বাস বলছেন, ‘‘দেড় মাস আগে প্রধান শিক্ষক বদলি হয়েছেন। এসআই আমাকে সপ্তাহ খানেকের জন্য স্কুলটি চালাতে বলেন। আমি জানিয়েছিলাম যে এক জনের পক্ষে স্কুল পরিচালনা করা সম্ভব নয়। দু’মাস কেটে গেল। কোনও ব্যবস্থাই হল না।’’
রানিনগর ১ এর বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলছেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু যেহেতু এটা শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় তাই শিক্ষা দফতরের কর্তারা বিষয়টি দেখতে বলেছি।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগেই একজন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে ওই স্কুলে। কিন্তু আমি শুনেছি, গ্রামের কয়েকজন তাকে স্কুলে যোগ দিতে দেননি।’’
স্থানীয় গ্রামবাসীরা যা শুনে আকাশ থেকে পড়ছেন। তাঁরা জানান, নিয়োগের কথা তাঁরা জানেনই না। তাঁদের কথায়, ‘‘তা হলে সকাল থেকে স্কুলে এসে ধর্ণা দেব কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy