Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শংসাপত্র চেয়ে আশ্বাসই প্রাপ্তি

চরমেঘনার বাসিন্দা অমিত মাহাত জানান, তাঁদের রেশন কার্ড বা আধার কার্ড থাকলেও তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও জাতির শংসাপত্র নেই। ২৫ বছর ধরে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও কাজ হয়নি।

পরিষেবা পেতে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

পরিষেবা পেতে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
 করিমপুর  শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে চেষ্টা করেও জাতির শংসাপত্র পাননি। বৃহস্পতিবার করিমপুরে সমন্বয় শিবির অনুষ্ঠানেও আশ্বাস পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের গ্রাম চরমেঘনার অধিকাংশ বাসিন্দাকে।

চরমেঘনার বাসিন্দা অমিত মাহাত জানান, তাঁদের রেশন কার্ড বা আধার কার্ড থাকলেও তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও জাতির শংসাপত্র নেই। ২৫ বছর ধরে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও কাজ হয়নি। এ দিন তাঁদের অনেককে আবার নতুন করে শংসাপত্র জমা দিতে হল। মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, “কাঁটাতারের বেড়ার ওপারের গ্রামে প্রায় আটশো মানুষের জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল। মাত্র ১৫ জনকে সম্প্রতি শংসাপত্র দিতে পেরেছি।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, বাকিরা যাতে শীঘ্র শংসাপত্র পান, সে জন্য কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই বাকিরা শংসাপত্র পেয়ে যাবেন।

তবে শংসাপত্র হাতে না পেয়ে হতাশই হয়েছেন চরমেঘনার বাসিন্দারা। চরমেঘনার বাসিন্দা অমিত বলেন, ‘‘আমাদের বিষয় খতিয়ে দেখে শংসাপত্রের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন কর্তারা। তবে দীর্ঘ দিন ধরে আশ্বাসই তো পেয়ে আসছি। কবে হাতে পাব, কে জানে?’’

শুধু শংসাপত্রই নয়, এলাকার সাধারণ মানুষকে রূপশ্রী, মানবিক আবাস যোজনা, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, রেশন কার্ড, পশু পালনের মত বিভিন্ন পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এ দিন করিমপুরে ওই সমন্বয় শিবির অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, নদিয়ার জেলা শাসক বিভু গোয়েল, তেহট্টের মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত, করিমপুর ১-এর বিডিও অনুপম চক্রবর্তী-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

নিজেদের বার্ধক্য ভাতার আবেদন জানাতে এ দিন এসেছিলেন মুক্তাদহ থেকে পার্বতী মণ্ডল, যমশেরপুরের পুষ্প সরকার, সেনপাড়ার ইয়ানুস মণ্ডল, আনন্দপল্লির ঊষারানি সাহা। তাঁদের সকলের বয়স ৮০ পেরিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বিধবা ভাতা বা বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার জন্য স্থানীয় ব্লক অফিসে বারবার আবেদন করা হলেও এখনও তা হয়নি। তাই আবার নতুন করে আবেদন জানাতে এসেছেন। রেশন কার্ডে নামের ভুল বানান সংশোধনের জন্য আবেদনপত্র জমা দেন আঙারদহের আব্দুল মজিদ মালিথ্যা ও করিমপুরের জানকী হালদার। সাংসদ মহুয়া জানান, কিসান ক্রেডিট কার্ডের মতো কিছু পরিষেবা তাড়াতাড়ি দেওয়া সম্ভব হলেও বার্ধক্য ভাতা বা আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার জন্য সময় লাগে। কারণ, এই সব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক কোটা থাকে। তবে তথ্য জমা দিলে আগামী দিনে সকলেই সেই পরিষেবা পাবেন। তথ্য দিলে রসিদ বা কাগজ দেওয়া হচ্ছে। পরে অনলাইনে খোঁজ নেওয়া যাবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পরিষেবা কেন্দ্র আগামী দিনে প্রতি ব্লক বা পঞ্চায়েতে করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ নিজের নিজের এলাকায় প্রয়োজনীয় পরিষেবা পেতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia Charmeghna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE