Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Rajasthan

রাজস্থান ফেরত দীর্ঘক্ষণ ট্রলিতেই

কিন্তু তাঁর চিকিৎসা করা দূরের কথা, কেউ তাঁর কাছও ঘেঁষছেন না। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রায় আধ ঘণ্টা হাসপাতাল ভবনের বাইরে ট্রলিতেই খোলা আকাশের নীচে শুয়ে থাকতে হয় তাঁকে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৩
Share: Save:

অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর রাজস্থানের।

তাতেই কৃষ্ণনগরে এসে পৌঁছেছেন এক রোগী। স্ট্রেচারে শুয়ে রয়েছেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল চত্বরে। মাথাযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মাঝে মাঝেই দু’হাতে মাথা চেপে ধরে কাতরে উঠছেন।

কিন্তু তাঁর চিকিৎসা করা দূরের কথা, কেউ তাঁর কাছও ঘেঁষছেন না। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রায় আধ ঘণ্টা হাসপাতাল ভবনের বাইরে ট্রলিতেই খোলা আকাশের নীচে শুয়ে থাকতে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে থাকা এক গ্রামবাসী ট্রলি ঠেলে জরুরি বিভাগের সামনে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও তাঁকে দীর্য সময় পড়ে থাকতে হয় বলে অভিযোগ। শেষে হাসপাতাল সুপারের হস্তক্ষেপে তাঁকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইতিমধ্যে খবর পেয়ে চলে আসেন ওই রোগীর পরিবারের লোকজন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ ব্যক্তির নাম নবকুমার মল্লিক। বাড়ি চাপড়ার শান্তিপাড়ায়। তিনি রাজস্থানে জয়পুরে একটি হোটেলে কাজ করতেন। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে জয়পুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলে মালিক অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

নবকুমারের সঙ্গেই রাজস্থান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে ফিরেছেন শান্তিপাড়ারই পবন মণ্ডল। তিনি জয়পুরেই থাকেন। তাঁর কথায়, “মাঝে-মাঝেই ওঁর মাথায় যন্ত্রণা হত। দিন কয়েক আগে হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে জয়পুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক বলেছেন, ওঁর মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে।”

পবন জানান, মঙ্গলবার রাতে পুলিশের বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাঁরা জয়পুর থেকে নদিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। টানা চলে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু তার পরে নবকুমারকে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অ্যাম্বুল্যান্সের চালকও কার্যত একই কথা জানিয়েছেন। পবনের আক্ষেপ, “যে ভাবে মানুষটাকে ফেলে রাখা হল, সেটা চোখে দেখা যায় না।”

ঘটনা হল, নবকুমার যেখানে স্ট্রেচারে শুয়ে ছিলেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে তারই সামনে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন নার্সেরা। প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন এক জন রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই পড়ে থাকতে হবে হাসপাতাল চত্বরে? হাসপাতালের একটি সূত্রের দাবি, চাপড়ার করোনা আক্রান্তের ভর্তি হওয়ার জেরে সকলেই এত আতঙ্কিত ছিলেন যে রোগ না বুঝে কেউ এগোতে চাননি। হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার দাবি করেন, “ওঁর সঙ্গে এমন কেউ ছিল না যে ওঁকে ভর্তি করতে পারে । পরিবারের লোক আসার পরেই উনি ভর্তি হয়েছেন। আমি বিষয়টি জানার পরেই ওঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajasthan Patient Treatment Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE