Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
একটু আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠার মধ্যে দিয়ে যেন তাঁরা হারিয়ে যাওয়া দিনগুলিকে খুঁজে পান

ম্যারাপ বাঁধা দেখে মনে পড়ে বাড়ির কথা

ঘরের ঠিকানা কবেই ভুলেছেন তাঁরা। পাঁচ-সাত বছরে চেনা উঠোন আর এক চিলতে চৌক্কিতে দিব্যি ‘ঘর’ সাজিয়েছেন। এখন ওঁদের স্বাগত-বিদায়ের আটপৌরে আশ্রয় এই মানসিক হাসপাতাল।

তালে-তালে: গানের সুরে নাচ। বহরমপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

তালে-তালে: গানের সুরে নাচ। বহরমপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৭
Share: Save:

ঘরের ঠিকানা কবেই ভুলেছেন তাঁরা। পাঁচ-সাত বছরে চেনা উঠোন আর এক চিলতে চৌক্কিতে দিব্যি ‘ঘর’ সাজিয়েছেন। এখন ওঁদের স্বাগত-বিদায়ের আটপৌরে আশ্রয় এই মানসিক হাসপাতাল।

শুক্রবার, সেখানেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হল ওঁদের। নাচ-গান-আবৃত্তি, হারানো অভ্যাসের মরচে ছাড়িয়ে ফের যেন ঝালিয়ে নিলেন পুরনো দিন।

তাই নাচ শেষে হাঁফাতে হাঁফাতে মহিলা বলেন, ‘‘এখনও প্রমাণ দিতে হবে আমি সুস্থ কিনা!’’ বাড়ি তাঁদের ফিরিয়ে নিতে চায় না। এই পাঁচিলের আড়ালে, ‘অসুস্থতা’র ঘেরাটোপেই তাই ঘরবসত ওঁদের।

এ দিন, বর্ষবরণের আয়োজন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। গত কয়েক বছর ধরেই এ কাজটা করছে তারা। মানসিক হাসপাতালের রোগীদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাই করে চলেছে তারা। সংস্থার পক্ষে রত্নাবলী রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালের ওই আবাসিকদের মনোরঞ্জনের জন্যই এ দিন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এর আগে বছরের শুরুতেই তাদের নিয়ে পিকনিকও হয়। ওঁদের খুশি রাখাটাই আমাদের কাজ।’’

যাতে হাসপাতালের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে এসে ওই আবাসিকরা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে নিজেদের মত করে একটা দিন কাটাতে পারেন, সে জন্যই এই চেষ্টা। আত্মীয়-পরিজন ছাড়া হয়ে অনেকেই বছরের পর বছর হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে একটু আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠার মধ্যে দিয়ে যেন তাঁরা তাঁদের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলিকে খুঁজে পান। এমনই মনে করছেন রত্নাবলী।

সালারের গুলহাটিয়া গ্রামের যুবক মহম্মদ আরফিনের বলছেন, ‘‘মনে পড়ে, ফিরোজ, সানি, উজ্জ্বল, রানা, দীপুদের কথা। যাদের সঙ্গে প্রতি বছর গ্রামের মাঠে ম্যারাপ বেঁধে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করতাম। খুব মিস করছি ওদের জানেন।’’

আর অনুষ্ঠান শেষে কাটোয়ার মৌসুমী কুণ্ডু বলছেন, ‘‘গান যে গাইতাম, তাই ভুলে গেছিলাম। খুব ভাল লাগছে জানেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Mental Disorder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE