Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Containment Zone

নিয়ম মানা ও ভাঙার খেলা কন্টেনমেন্টে

নদিয়া জেলায় মাস্ক না পরে বেরোনোর জন্য গত দু’ দিনে প্রায় দু’হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মাস্ক ছাড়াই কন্টেনমেন্ট এলাকায় ঢুকছেন এক বৃদ্ধা। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

মাস্ক ছাড়াই কন্টেনমেন্ট এলাকায় ঢুকছেন এক বৃদ্ধা। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৮
Share: Save:

বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সাড়ে ন’টা। কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়কের উপরে নাকা চেকিং করছিল ভীমপুর থানার পুলিশ। কৃষ্ণনগরের দিকে ফিরছিল মালবাহি গাড়িটি। চালকের পাশে বসে জনা চারেক। তাঁদের কারোরই মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক-বিধি ভাঙায় গ্রেফতার করা হল চালক-সহ পাঁচ জনকে।

নদিয়া জেলায় মাস্ক না পরে বেরোনোর জন্য গত দু’ দিনে প্রায় দু’হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবারও প্রতিটি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। কৃষ্ণনগর শহরে ৭টি কেসে ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার চলেছে। টহলদারি গাড়ি ঘুরেছে। আসাননগর বাজারে মাস্ক না পরার জন্য ১২ জনকে বাজার থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে ভীমপুর থানার পুলিশ। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই বলছেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই এই অভিযান শুরু করেছিলাম। পথচলতি কারোর মুখে মাস্ক না দেখলে তাঁকে রুমাল বা গামছা দিয়ে মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে। সেটাও যদি না থাকে তা হলে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” কৃষ্ণনগর শহরের নাজিরাপাড়া এলাকাতেই শুক্রবার তা ঘটেছে।

তবে এত কিছুর পরেও শুক্রবার রাস্তাঘাটে অনেককে মাস্ক ছাড়া দেখা গিয়েছে। জাফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে মানুষ মাস্ক পরতে অভ্যস্ত হন। আমি নিজে প্রায় প্রতিটা থানা এলাকায় গিয়ে বাজারে, রাস্তায় প্রচার করেছি। মাস্ক বিলি করেছি। আমাদের সিনিয়র অফিসারদের নেতৃত্ব সবটা হচ্ছে। আমরা এটা চালিয়ে যাচ্ছি।”

কন্টেনমেন্ট জোনগুলি নিয়ে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। কৃষ্ণনগর শহরে সব কন্টেনমেন্ট জোনকে বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। যেমন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রোডের যে দিকে কন্টেনমেন্ট জোন করা হয়েছে সেই দিক ঘেরা হয়েছে। তবে রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করছে। রাস্তার উল্টোদিক স্বাভাবিক। গলির মুখে পুলিশি রয়েছে। এ দিন দু’-এক জন বাইক নিয়ে ওই এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করতে গেলে তাঁদের আটকে দেন পুলিশকর্মীরা।

রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের রামনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে এক তৃণমুল নেতা করোনা-আক্রান্ত হওয়ার পর ওই এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন। ওই ব্লকের হবিবপুর পঞ্চায়েত পাড়া এবং পুলিননগরে রয়েছে কন্টেনমেন্ট জোন। চাকদহের তাতলা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বায়নও এখন কন্টেনমেন্ট জোন। সব জায়গায় রয়েছে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার। কোথাও নিয়ম ভাঙার খবর মেলেনি।

শান্তিপুর ব্লকের হরিপুর পঞ্চায়েতের রায়পাড়ার একাংশ এবং পাশের কিছু এলাকা নিয়ে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। এলাকায় প্রবেশের এবং বেরোনোর তিনটি রাস্তা এখন বন্ধ। শুক্রবার সকালে ওই এলাকায় যান শান্তিপুরের বিডিও সুমন দেবনাথ, ওসি সুমন দাস, প্রধান শোভা সরকার মণ্ডল। রায়পাড়া এলাকায় ড্রপগেটের কাছে দোকান থেকে বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেতে যাতে অসুবিধা না-হয়, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। শান্তিপুর শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে কন্টেনমেন্ট জোন। তবে শান্তিপুর শহরে এবং গ্রামে বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। মাস্ক ছাড়াই এখনও অনেকে পথে বেরোচ্ছেন।

তাহেরপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কন্টেনমেন্ট জোন হয়েছ। এলাকায় প্রবেশ এবং বেরোনোর তিনটি রাস্তা চিহ্নিত করে তা রুদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নাকাশিপাড়া ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেথুয়াডহরী মধ্যপাড়া যে বাফার জোন ছিল তা কনটেইনমেন্ট জোনের আওতায় নিয়ে এসেছে। সেখানে কড়া নজরদারি তেহট্টের কন্টেনমেন্ট জোনগুলিও বাঁশের ব্যারিকেড করে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এখানে এ দিন নিয়ম ভাঙার কোনও খবর মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন শুধু ফোন পাণীয় জল চেয়েছেন বলে তেহট্ট পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Containment Zone Nadia Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE