Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

লাইফ জ্যাকেট না পরেই পারাপার

ভৈরবের গরিবপুর ঘাটে নৌকাডুবির পর অতীতের একই রকম দুর্ঘটনার কথা অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও ভাগীরথী দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকা পারাপার বন্ধ হচ্ছে না।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

ভৈরবের গরিবপুর ঘাটে নৌকাডুবির পর অতীতের একই রকম দুর্ঘটনার কথা অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও ভাগীরথী দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকা পারাপার বন্ধ হচ্ছে না। মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাগীরথীর ওপর যে সমস্ত ফেরিঘাট রয়েছে সেগুলির মধ্যে নারকেলবাড়ি, কুমারপুর ঘাট অন্যতম ব্যস্ত। কুমারপুর ঘাটের দু’দিকে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন রয়েছে। ভাগীরথীর পুবদিকে শিয়ালদহ-লালগোলা শাখা এবং পশ্চিমে কাটোয়া-আজিমগঞ্জ। ওই দু’ই শাখার স্টেশনগুলি হল বেলডাঙা এবং বাজারসৌ। স্টেশন দু’টিতে অনেকগুলি এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন থামে। ফলে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কুমারপুর ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার চলে।

কিন্তু কীভাবে পারাপার? ছোট নৌকায় মানুষের পাশাপাশি তোলা হয় পণ্যবোঝাই লছিমন, গবাদি পশু। অনেক সময় এর সঙ্গে গাড়িও যোগ হয়। যে বাঁশের তৈরি জেটির ওপর দিয়ে হেঁটে নৌকায় উঠতে হয়, সেটির অবস্থাও খারাপ। দিনের ব্যস্ত সময়ে এক একটি নৌকায় কমপক্ষে ৫০ জন যাত্রী নিয়ে তোলা হয় বলে অভিযোগ। এর সঙ্গে থাকে মোটরবাইক, সাইকেল লছিমন। কুমারপুর-সাটুই ঘাট পারপারের ভাড়া পাঁচ টাকা। মোটরবাইকের জন্য দিতে হয় ১০ টাকা। লছিমন, গবাদি পশু ও টোটোর ভাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক হয়। অনেক ক্ষেত্রে মাসিক ভাড়াও চালু আছে।

তবে যাত্রীদের অভিযোগ, বাঁশের তৈরি জেটি থেকে নৌকার মাঝখানে অনেকটা জায়গা ফাঁকা। অর্থাৎ, একবার পা ফস্কালে সোজা জলে। বৃষ্টিতে পাড়ের মাটি পিছল হয়ে যায়। সাবধান না হলে জলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। নৌকায় উঠেও নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না। কারণ, লছিমন, বাইকের ভিড়ে সেখানে যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত থাকে না। সোমবার ওই ঘাটে গিয়ে কোনও যাত্রীকেই লাইফ জ্যাকেট পরতে দেখা গেল না। মাঝিরাও এ নিয়ে তাঁদের জোরাজুরি করেন না।

ঝড়, বৃষ্টি হলেও ফেরি বন্ধ করা হয় না। সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলো ছাড়াই অনেক নৌকা নদী পারাপার করে এই ঘাট দিয়ে। যদিও মাঝিদের দাবি, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই আমরা নৌকা চালাই। নৌকায় লাইফ জ্যাকেট, টিউব থাকে। অফিস টাইমে একটু ভিড় হয়। তবে অতিরিক্ত যাত্রী তুলি না।’’ যাত্রীরা আবার উল্টো কথা বলছেন। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘লছিম‌নে অনেক সময় গরু বাধা থাকে। তা না নামিয়েই নৌকায় তোলা হয়। মাঝনদীতে নৌকা এমন ভাবে দুলে ওঠে যে শিশুরা ভয় পেয়ে যায়। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ এ নিয়ে পুলিশ কী বলছে? বেলডাঙা থানার দাবি, তারা ওই ঘাটে নিয়মিত নজরদারি চালায়। ওসি সমিত তালুকদার বলছেন, ‘‘চার দিন আগে বেলডাঙার পাঁচটি ফেরিঘাটে সরেজমিনে নজরদারি চালানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Crossing life Jacket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE