প্রতীকী ছবি।
ওঁরা কেউ ভুক্তভোগী। কেউ আবার অযথাই ভয় পাচ্ছেন। কেউ আবার বলছেন, এখন তত মালুম হচ্ছে না বটে, দু’দিন পরে বুঝবেন। নোটবন্দির দিনগুলো ভুলে গেলেন নাকি? টিভি দেখাচ্ছে, দেশের নানা রাজ্যে এটিএম শুকনো। লোকে টাকা তুলতে না পেরে হন্যে হয়ে ঘুরছে। স্বভাবতই অনেকে শঙ্কিত, তবে কি এখানেও একই হাল? আজ না হলেও কাল হতে পারে?
এমনিতেই এটিএমে গিয়ে টাকা না পাওয়ার অভিজ্ঞতা, বিশেষত রাতের দিকে, অনেকেরই আছে। পছন্দসই নোট না পাওয়া তো আছেই। কিন্তু এখন টাকা না পেলেই অন্য ভয় চেপে বসছে— তবে কি এখানেও এটিএম শুকিয়ে গেল?
ব্যাঙ্ক বলছে, এ রাজ্যে এখনও তেমন প্রভাব পড়েনি। বেশির ভাগ এটিএমেই টাকা আছে। নদিয়ার লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার নগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “আমাদের জেলায় কোনও সমস্যাই নেই। আটটি চেস্ট ব্যাঙ্কে যে টাকা আছে, আগামী এক মাস সমস্যা হওয়ার কথা না।” মুর্শিদাবাদের জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিত সিংহও বলছেন, এখনই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। এটিএমে গিয়ে টাকা না পাওয়ার টুকটাক অভিযোগ অবশ্য আসছেই। মুর্শিদাবাদে নবগ্রাম ও পলসণ্ডার মতো প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ অভিযোগ করেছেন। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের নবগ্রাম ব্লকের পাশলা শাখার ম্যানেজার ইয়াসুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের নিজস্ব এটিএম কাউন্টার নেই। গ্রাহকেরা অন্য ব্যাঙ্কের এটিএম করেন। নবগ্রাম ও পলসন্ডায় টাকা না পেয়ে বুধবার তারা ব্যাঙ্কে এসে অভিযোগ করে গিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
অন্য সমস্যাও আছে। কৃষ্ণনগরে একটি চেস্ট ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, তারা গত মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ৭০ কোটি টাকা চেয়ে পাঠান। পেয়েছেন মাত্র ৪১ কোটি টাকার নোট। অনেকে নেট ব্যাঙ্কিং মারফত টাকা জমা করায় নোট ব্যাঙ্কে ফিরছে না। বিভিন্ন রাজ্যে নোট সঙ্কটের খবর পেয়ে কিছু বড় ব্যবসায়ী আবার ব্যাঙ্কে নোট রাখতে ভয় পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ব্যাঙ্ক গোল বাধছে। বহু এটিএম একেবারে বন্ধ না হয়ে গেলেও অনেক ব্যাঙ্ক প্রয়োজনের তুলনায় কম টাকা রাখছে। বিকেল বা সন্ধের পর টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে।
বহরমপুরে ট্রাক্টর যন্ত্রাংশ বিক্রেতা কুতুবুদ্দিন বিশ্বাসের দাবি, এ দিন তাঁর গ্রাহকদের অনেকেই টাকা তুলতে না পেরে আত্মীয়-পরিচিতদের থেকে ধার করেছেন। অনেকেই আবার দোকানে ধার রেখে গিয়েছেন। কলেজ শিক্ষক নিজাইরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সকালে কাশিমবাজারে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে হয়রান হলাম। পঞ্চাননতলা, কদবেলতলার এটিএমে টাকা নেই।’’
মুর্শিদাবাদের জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিত সিংহও মেনে নেন, বেশি না পড়লেও কিছুটা পড়েছে। তবে কিছু এটিএমে সারা বছরই টাকা দিতে অসুবিধে হয়। অনেক সময়ে প্রযুক্তির কারণেও যন্ত্র বিকল থাকে। তবে এখনও এই সমস্যা গুরুতর কিছু নয় বলেই তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy