গোপালের মৃতদেহ নিয়ে মাসাদুলরা। নিজস্ব চিত্র
বেশ বছর ক'য়েক ধরে বয়সজনিত অসুখে ভুগছিলেন রানিতলা থানার নশিপুর মানিকডাঙার বাসিন্দা গোপাল মণ্ডল। রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে শোকের আঘাত নামে বজ্রপাতের মতো। তাঁর স্ত্রী শোভাদেবী বলেন, ‘‘স্বামীর সৎকার কিভাবে করব, তাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সে টাকাও নেই আমাদের।’’ জিয়াগঞ্জ শ্মশানে আনার জন্য গাড়ি ভাড়া, শ্মশানে দাহকাজের খরচ সহ সব মিলে হাজার ক'য়েক টাকা খরচ রয়েছে। অবশেষে গোপালের অন্ত্যেষ্টিতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা মাসাদুল হল, আফরিন শেখ, ইয়াকুব আলি সহ বেশ কয়েক জন। তারপর তারা নিজেরা চাঁদা তোলেন গ্রামে। এগিয়ে আসেন গ্রামের বাসিন্দারাও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রানিতলা থানার নশিপুরের মানিকডাঙা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম। তার মধ্যে কয়েকটি হাতে গোনা হিন্দু পরিবার রয়েছে। এদিন বাঁশ কাটা থেকে গাড়ি ভাড়া সব কাজেই হাত লাগিয়েছেন আরফিনরা। জিয়াগঞ্জ শ্মশানেও এসেছিলেন ইয়াকুব আলি, আফরিন শেখরা। শ্রাদ্ধেও গোপালের পরিবারের পাশে তাঁরা দাঁড়াবেন বলেই জানিয়েছে। মাসাদুল রানিতলা থানার সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি করে। এদিন তিনি বললেন, ‘‘কাকিমার আজ বিপদের দিন। এই সময় আমরা পাশে না দাঁড়াবো তো কে দাঁড়াবে?’’
গোপালের সামান্য জমি ছিল। দিনমজুরিও করতেন। ইয়াকুব বলেন, ‘‘শোভাকাকিমা অত পয়সা পাবেন কোথায়। গোপালকাকা কাজ করে যা অল্প স্বল্প পয়সাকড়ি জমিয়েছিলেন, তা সব ওষুধ কিনতেই চলে গিয়েছে।"
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভগবানগোলা-২ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মিজানুল হক বলেন, ‘‘গোপালকাকা আমাদের গ্রামের বাসিন্দা। আমরা শুনেই গ্রামের বাসিন্দা উপেন মণ্ডল, সুরেশ মণ্ডলকে নিয়ে আলোচনা করে সঙ্গে সঙ্গে হাত লাগাই। 'কৃষক বন্ধু' প্রকল্পে যাতে শোভাকাকিমা দু'লক্ষ টাকা পায় সেই ব্যবস্থাও আমি করছি।’’
শোভা বললেন, ‘‘এই অবস্থায় গ্রামের মানুষ পাশে দাঁড়ালে কী যে করতাম জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy