বাজারে বেলাগাম। —নিজস্ব চিত্র
করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে জেলার এমন দুই এলাকার ছবি সম্পূর্ণ যেন আলাদা। কান্দির মাড়গ্রামে রাস্তা সুনসান। আতঙ্ক চেপে বসেছে। ডোমকল শহরে আবার করোনা-আতঙ্কের কোনও প্রভাব নেই, আর পাঁচটা দিনের মতোই লকডাউন উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ পথে নেমেছেন, চলেছে বাজারহাট থেকে গাড়ি ঘোড়াও। কেবল জিতপুরে কিছুটা এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘিরে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দাদের লালা রস সংগ্রহ করা হয়েছে, তা ছাড়াও চিহ্নিত করা হচ্ছে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের। ডোমকল পুরসভার পুর প্রধান জাফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘গোটা এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে জোরকদমে। দিনরাত্রি কাজ করছেন আমাদের কর্মীরা।’’
মাড়গ্রামে করোনাভাইরাস আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে থাকা আরও ১৪ জনের সন্ধান ইতিমধ্যেই পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার সকালে ওই ১৪ জনকে খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
মাড়গ্রাম অঞ্চলে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এলাকার কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও। আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে আসা ২৮ জনকে চিহ্নিত করে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই যুবক গত ৮ মে কলকাতা থেকে যে গাড়িতে বাড়ি ফিরেছিলেন, সেই গাড়িতে অন্য কোনও পরিযায়ী শ্রমিক সেই গাড়িতে ছিলেন কি না, তার খোঁজ শুরু হয়। তখনই মাড়গ্রামের পাশের অঞ্চল থেকে ছয় জন শ্রমিক ও ওই ব্লকের আর একটি অঞ্চলের আট জন পরিযায়ী শ্রমিকের খোঁজ মেলে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে থাকা সকলের লালারস সংগ্রহ করে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, “ওই যুবকের সংস্পর্শে থাকা প্রত্যেকের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও ১৪জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যাঁরা ওই যুবকের সঙ্গে কলকাতা থেকে এক সঙ্গে বাড়ি ফিরেছিলেন। আমরা কোনএ ঝুঁকি নিচ্ছি না। প্রত্যেকের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে।”
তবে ডোমকলে একদিকে করোনা অন্য দিকে খুনের ঘটনা দুই মিলে উদ্বিগ্ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি এলাকা। এলাকার বাসিন্দা মহিবুল ইসলাম বলছেন, ‘‘গোটা এলাকা পুলিশ ২৪ ঘণ্টা ঘিরে রেখেছে। ইদের আগে একেবারে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছি আমরা।’’ তবে কেবল ওই এলাকাটি ছাড়া ডোমকলের বাকি অংশে কোথাও কোনও লকডাউনের ছাপ নেই, স্বাভাবিক জীবনযাত্রাই চলছে ডোমকল জুড়ে। হাটে বাজারে সামাজিক দূরত্ব মানার বালাই নেই, রাস্তা জুড়ে চলছে টোটো। অনেক দোকানপাট ও খোলা স্বাভাবিক দিনের মতোই।
এর মধ্যে নদিয়ার এক করোনা আক্রান্তের খবর প্রশাসনের কানে পৌঁছেছে। ওই ব্যক্তি কেরল থেকে ডোমকলের আত্মীয়দের সঙ্গে ট্রেনে ফিরে সোজা বাসে চেপে এসেছিল ডোমকলের শাহাদিয়াড়ের শ্বশুরবাড়ি। সেখান থেকে এক আত্মীয়কে নিয়ে ফিরেছেন বাড়ি। ডোমকলের এসিএমওএইচ মামুন রশিদ বলেছেন, ‘‘কেরল থেকে ফেরা ওই আক্রান্তের আত্মীয়দের হোম কোয়রেন্টিনে থাকার জন্য বলা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে তাদের লালা রস সংগ্রহ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy