গৌরসুন্দর সিংহ। নিজস্ব চিত্র
তাঁর হাতে তৈরি নাকছাবি, দুলের কদর ছিল এলাকায়। কারও বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁকেই আলাদা করে বলা হত, পছন্দের গয়না বানিয়ে দিতে। তাতে শুধুসংসারই যে চলত তা নয়। নিের কাজের প্রতি ভালবাসাও বাড়ত। নিজের প্রতি সম্মানও থাকত। করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সে সবই এখন এক রকম অতীত। যাঁর হাতে সোনা কথা বলত, তিনি এখন দোকানো দোকানে ফেরি করেন নানা জিনিসপত্র। ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ থেকে রান্নার ঘি, মশলা থেকে শুরু করে হরেক পণ্য নিয়ে গিয়ে দিয়ে আসেন দূরের দোকানে দোকানে।
বেলডাঙা পুরসভা এলাকার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়া এলাকার বাসিমধ্য ত্রিশের সেই গৌরসুন্দর সিংহ ১৩ বছর ধরে যুক্ত স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে। শুধু এলাকায় নয়, গত পাঁচ বছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে হাতের তৈরি নাকছাবি বিক্রি করেছেন। কখনও বর্ধমান, দুর্গাপুর ও আসানসোলে ঘুরে সেই সোনার তৈরি গয়না বিক্রি করেছেন। রোজগারও করেছেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে সোনার কারবারে মন্দা। প্রথমত সোনার দাম পঞ্চাশ হাজার অতিক্রম করেছে। তার সঙ্গে করোনা আবহে লকডাউন জনিত কারণে গণপরিবহন বন্ধ। ফলে ভিন জেলায় গিয়ে নাকছাবি সহ অন্য কাজ বন্ধ। এতে সমস্যা বাড়ে। গৌরসুন্দর ভেবে কুল কিনারা করতে পারছিলেন না। কিন্তু কিছু না করলে মা,ভাই কে নিয়ে তিন জনের সংসার চলবে কি ভাবে। কোন নতুন ব্যবসা করতে গেলে মূলধনের প্রয়োজন। কোথায় মূলধন! যা ছিল তা তো বাজারে পরে রয়েছে সোনার কারবারে। কারণ দীর্ঘদিন বাজার বন্ধ থাকায় ব্যাবসায় যে টাকা পরে রয়েছে তার গতি হয়নি। ফলে একটা কাজ তাকে খুঁজতেই হত। শেষ পর্যন্ত বেলডাঙা বড়ুয়া কলোনি এলাকায় এক ডিস্ট্রিবিউটারের কাছে কাজ পান।
গৌরসুন্দরের কথায়, “১৩ বছর পরে হাত থেকে সোনা নামল। এক দাদার ডিস্ট্রিবিউটরের কারবারে কাজ পেয়েছি। না হলে কী করতাম বুঝতে পারছি না।” যিনি কাজ দিয়েছেন সেই ডিস্ট্রিবিউটার অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “সোনার ব্যবসার কাজ হারিয়ে সমস্যায় ছিল ওই যুবক। গত দুই মাসের বেশি কাজ করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy