Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাবা ‘বুক্ড’ ২০৮০ সাল পর্যন্ত

বহরমপুর শহরের সৈয়দাবাদ এলাকার ডালপালা মেলা বিপুল নিমের ছায়ায় সেই শিবের অধীষ্ঠান, এলাকায় তাই তাঁর নাম নিম বাবা। এলাকায় এমন জাগ্রত বাবার সংখ্যা অবশ্য কম নয়— তাঁদের কেউ বোল্ডার কেউ বা সাঁকো, কেউ বস তো কেউ চট কিংবা ফাটা বাবা!

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

বাবা ‘বুকড’ হয়ে আছেন একেবারে ২০৮০ সাল পর্যন্ত!

তাঁর পুজোর যাবতীয় খরচ আগামী ছয় দশকের জন্য একেবারে সুনিশ্চিৎ। ভক্তেরা এখন থেকেই সেই দায় নিজের কাঁধে নিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাবার মাহাত্ম্য। প্রথম হেমন্তের সেই শিব পুজোর মূর্তি থেকে প্রসাদ, পুজোর যাবতীয় খরচের ভার আগামী বাষট্টি বছরের জন্য বুক পেতে নিয়েছেন তাঁরা। পুজো কর্তা গৌতম দে সরকার বলছেন, ‘‘বাবার মাহাত্ম্য বুঝছেন তো, তাই হাজার পঁচিশেক টাকার সেই দায় কে নেবেন তাই নিয়ে এখন থেকেই ভক্তদের মধ্যে প্রায় প্রতিযোগিতা।’’

বহরমপুর শহরের সৈয়দাবাদ এলাকার ডালপালা মেলা বিপুল নিমের ছায়ায় সেই শিবের অধীষ্ঠান, এলাকায় তাই তাঁর নাম নিম বাবা। এলাকায় এমন জাগ্রত বাবার সংখ্যা অবশ্য কম নয়— তাঁদের কেউ বোল্ডার কেউ বা সাঁকো, কেউ বস তো কেউ চট কিংবা ফাটা বাবা! এলাকায় এমনই অজস্র শিব মূর্তির এমনই সব নাম। ভক্তদের ভাসলবাসায় এমনই নামে পুজো হচ্ছে অজস্র শিব-মূর্তির। এলাকায় একত্রে যাঁরা বাবা ভৈরব!

সেই তালিকায় নিম বাবার কদর বেশ ওপরের দিকে। সেই ভৈরব পুজোর যাবতীয় খরচ বহন করতে এখন থেকেই মানত করে ভক্তেরা নাম লিখিয়েছেন। তালিকা ‘বুকড’ হয়ে আছে ২০৮০ সাল পর্যন্ত। এলাকায় ভৈরবেরা সামন্তযুগের বাঙালি গৃহকর্তার মতোই ভোলেভালা, ছাই ভষ্ম মাখা, নাদুস নুদুল ভুড়ি সমৃদ্ধ মহাদেব। যাঁকে নিয়ে একুশ শতকের বাঙালির কম আবেগ জড়িয়ে নেই!

বহরমপুর শহরের খাগড়া এলাকার ভৈরবতলার আর এক মহাদেবকে নিয়েও কম তোলপাড় নেই। ঠাকুরের উচ্চতা প্রায় ২২ ফুট। ভক্তরা শনিবার ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত লাইন দিয়ে সেই মহাদেবের গলায় মালা পরান।

পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা সৌগত বিশ্বাস বলেন, ‘‘গাঁদা ও ধুতরো-সহ নানা ধরণের ফুলের মালা তো আছেই। সেই সঙ্গে এ বার গাঁজা দিয়ে তৈরি মালা, গাঁজার কলকে দিয়ে তৈরি মালাও মহাদেবের গলায় পরিয়েছেন অনেক ভক্ত। প্রায় আডা়ইশো জন ভক্ত এ বার মালা পরিয়েছেন।’’ ১৪৩ বছরের ওই মহাদেবের প্রতিমার দাম ও পুজোর খরচ বহণ করতে চাইলে ভক্তদের ২০৬০ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ? সৌগত বলেন, ‘‘প্রতিমার দাম ও পুজোর খরচ দেওয়ার জন্য ২০৬০ সাল পর্যন্ত আগাম বুক হয়ে আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ritual Pilgrim Sponsor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE