শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বা অসুস্থতা যেন গণতান্ত্রিক মতামত প্রকাশে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। সকল ভোটারেরাই যেন বুথমুখী হতে পারেন। এ বারের নির্বাচনে সেই কাজেই উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন।
এর জন্য জেলার নানা প্রতিবন্ধী সংগঠনের সঙ্গে কথাও বলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ওই সব সংস্থার কাছ থেকে ভোটদান সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবন্ধীদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজখবর নেওয়া চলছে। পাশাপাশি, বাড়তি হুইলচেয়ার এবং অন্য বন্দোবস্তও রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ায় মোটামুটি ১৬ হাজারের মতো প্রতিবন্ধী ভোটার রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই যাতে নির্দিষ্ট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন বা ভোটদানের ক্ষেত্রে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সমস্যা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই বিষয়ে উদ্যোগ করা হচ্ছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে হুইলচেয়ারের বন্দোবস্তও করা হচ্ছে।
কৃষ্ণনগরে দৃষ্টিহীনদের একটি স্কুলে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের কর্তারা জেলার বেশ কিছু প্রতিবন্ধী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন), সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকেরা এবং অন্য প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তিরা। অসুস্থ, বয়স্ক এবং শারীরিক ভাবে অক্ষম ভোটারদের সুবিধার জন্য হুইলচেয়ারের বন্দোবস্ত করছে প্রশাসন। কিন্তু এত সংখ্যক হুইল চেয়ার নেই প্রশাসনের হাতে। সেই কারণে প্রশাসনের হাতে থাকা হুইলচেয়ারের বাইরেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধী সংগঠনের কাছ থেকে হুইল চেয়ার চাওয়া হয় প্রশাসনের তরফে।
নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) টি সি বর্মা বলেন, “ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বা অসুস্থতার কারণে যাতে কেউ সমস্যায় না পড়েন, তাঁর জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এর জন্য নানা প্রতিবন্ধী সংগঠনের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। কারণ, প্রচুর সংখ্যক হুইলচেয়ার প্রয়োজন।”
এর পাশাপাশি বিভিন্ন বুথে প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ ও বয়স্কদের সহায়তার জন্য প্রশাসনিক কর্মীরা হাজির থাকবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
হরিণঘাটার একটি প্রতিবন্ধী সংগঠনের সম্পাদক নিতাই রায়, আড়ংঘাটার প্রতিবন্ধী সংগঠনের সম্পাদক অর্জুন সাধুখাঁরা জানাচ্ছেন, শুধু শারিরীক প্রতিবন্ধীদের জন্যই নয়, অসুস্থ এবং বয়স্ক ভোটারদের জন্যও অনেক হুইলচেয়ার প্রয়োজন। নিতাই বলেন, ‘‘আমাদের হাতে যেগুলো আছে, তা দিয়েই সহায়তা করা হবে।”
এর পাশাপাশি সংগঠনগুলির তরফেও বেশ কিছু প্রস্তাব রাখা হয়। যেমন শান্তিপুরের এক প্রতিবন্ধী সংগঠনের সম্পাদক মলয় দে-র প্রস্তাব— “ঢালু জায়গা থাকলে ভাল হয়। উঁচু বারান্দায় ওঠানামা করতে প্রতিবন্ধীদের অসুবিধা হয়।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘সকলেই সুবিধা-অসুবিধার কথা আমাদের জানিয়েছেন। ভোটারদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে চলাফেরায় এবং অন্য সহায়তার ক্ষেত্রে যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়, সে দিকে আমরা খেয়াল রাখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy