Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আঠারো পদে স্বাগত নতুনকে

নতুন বছরের সঙ্গে মানানসই আঠারো রকমের পদ। আর তাতে চমকের যেন শেষ নেই। গোটা পিকনিক জুড়ে চা কফির জায়গা নিয়েছিল উষ্ণ গরম জলে মধু, সঙ্গে বিস্কুট। জলখাবারে ছিল প্রায় লুপ্ত যাওয়া চালভাজা। সঙ্গে ছোলা ভাজা, বাদাম ভাজা। তবে তেলে নয় সবটাই বালিতে ভাজা। সঙ্গে ঘরে তৈরি পাটিসাপটা।

বর্ষশেষে হাজারদুয়ারি।  নিজস্ব চিত্র

বর্ষশেষে হাজারদুয়ারি।  নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভাশিস সৈয়দ
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৬
Share: Save:

ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে খসে যাচ্ছে আস্ত একটা বছর। আসছে নতুন। আহ্বান জানাতে তৈরি আস্ত একটা দল। উপলক্ষ বনভোজন। কৃষ্ণনগর শহরের উপকণ্ঠের সেই বনভোজন সাক্ষী থাকল হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছুর।

পিচঢালা রাস্তার লাগোয়া সবুজ ধানক্ষেত। কৃষ্ণনগর শহর থেকে সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরের গ্রাম গোপালপুর। গাঁয়েরই নিমাই মণ্ডলের আবাদী জমির কোল ঘেঁষা একটেরে ঘরে বসেছে চড়ুইভাতির আসর। ভারি অদ্ভুত সব আয়োজন ছিল সেই বনভোজনে। একপাতার ম্যাগাজিন ছাপানো থেকে শুরু করে হারিয়ে যাওয়া খাবারের প্রদর্শনী।

নতুন বছরের সঙ্গে মানানসই আঠারো রকমের পদ। আর তাতে চমকের যেন শেষ নেই। গোটা পিকনিক জুড়ে চা কফির জায়গা নিয়েছিল উষ্ণ গরম জলে মধু, সঙ্গে বিস্কুট। জলখাবারে ছিল প্রায় লুপ্ত যাওয়া চালভাজা। সঙ্গে ছোলা ভাজা, বাদাম ভাজা। তবে তেলে নয় সবটাই বালিতে ভাজা। সঙ্গে ঘরে তৈরি পাটিসাপটা।

বছর শেষের ‘মদ-মাংস-মাইকের’ পিকনিকের মরসুমে এমন চড়ুইভাতি বড় একটা চোখে পড়ে না। বেলা গড়াতেই গরম টোম্যাটো স্যুপে চুমুক দিতে দিতে কবিতা পাঠ, গান, আলোচনা। দুপুরের ১৮ পদে ছিল টাটকা আনাজের স্যালাড। তুলাইপাঞ্জি চালের ভাত, আনাজ-ডাল, বেগুন পোড়া, বড়ি ভাজা, খেজুরের ফুলুরি, মোচার ধোঁকা, বাড়িতে তৈরি পনির, কচুর ঘণ্ট, শিম পোস্ত, ক্যাপসিকামের চাটনি, আলুর পাঁপড়। শেষ পাতে চন্দনপিঠে এবং রসবড়া। আজকাল যা প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। ‘চড়ুইভাতি’ নামের প্রকাশিত কাগজে প্রতিটি পদের নামকরণ করা হয়েছিল জনপ্রিয় গানের কলি দিয়ে। জলখাবারের চাল ছোলা বাদাম ভাজার জন্য ‘কতদিন পড়ে এলে একটু বসো’ তো বেগুনভাজার জন্য বাছা হয়েছিল ‘আগুনের পরশমনি’।

এমন অভিনব চড়ুইভাতির মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন উদ্যানপালন বিভাগের প্রাক্তন অধিকর্তা ব্যাসদেব চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণীর কেশব কর, নিমাই মণ্ডল প্রমুখেরা। ব্যাসদেবের কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে চালডাল এনে খিচুড়ি-বাঁধাকপি চড়ুইভাতি কবেই উঠে গিয়েছে। এখন পিকনিক মানেই মাছ মাংস সহযোগে সজোর ডিজে বক্সের সঙ্গে উদ্দাম নাচ। সেই ধারনা থেকে বেড়িয়ে এসে প্রকৃত বনভোজনের মজাটা আত্মস্থ করতে চেয়েই এই আয়োজন।’’

অন্য রকম বনভোজন দেখল নবদ্বীপও। নবদ্বীপে বুনো রামনাথের পুরনো ভিটের গথিক থামওয়ালা বিরাট বারান্দা সেদিন সকাল থেকেই সরগরম। ওঁরা সকলেই পৌরহিত্য পেশায় যুক্ত। পাশাপাশি বঙ্গবিবুধ জননী সভা পরিচালিত ‘পুরোহিত রত্ন’ উপাধির ছাত্রও বটে। গোটা দিন ধরে চলল পৌরহিত্যে নানা দিক নিয়ে তর্কবিতর্ক।

এটা যদি একটা দিক হয়, মুর্শিদাবাদে রয়েছে ‘চল ছুঁড়ি আজ তোর বিয়ে’ গোছের ‘চল পিকনিকে যাই’-এর মত বর্ষবরণ রাতের পিকনিকের আলোচনা। তবে জলঙ্গির ঝাউদিয়ার বাসিন্দাদের পিকনিকের চমক মোষের গাড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE