Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটকেরা ফিরে যান, পড়েই থাকে প্লাস্টিক

পুরকর্তারাই জানাচ্ছেন, কোনও উৎসব শেষ হলে পাহাড় প্রমাণ আবর্জনা পরিষ্কার করতে নাভিশ্বাস ওঠে পুরসভার। প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬২ মেট্রিক টন আবর্জনা হয় নবদ্বীপে। উৎসবের সময় তা আরও বাড়ে। আবর্জনার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে  প্লাস্টিকজাত দ্রব্য।  

বাজারে আমদানি হয়েছে কাগজের এমন থালা-বাটির। নিজস্ব চিত্র

বাজারে আমদানি হয়েছে কাগজের এমন থালা-বাটির। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

চৈতন্যধামে বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাস বা দোলের মতো বড় উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম ফি বছর। দেশবিদেশ থেকে আসা পর্যটকেরা নবদ্বীপে নিয়ে আসেন বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের ব্যাগ, বোতল ও প্লাস্টিক জাত নানা সামগ্রী। উৎসব শেষে তাঁরা ফিরে যান, কিন্তু নবদ্বীপে থেকে যায় তাঁদের আনা প্লাস্টিক। নিজেদের শহরজাত প্লাস্টিকের পাশাপাশি বহিরাগতদের আনা এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক ঠেকানোর পথ খুঁজছে পুরসভা।

পুরকর্তারাই জানাচ্ছেন, কোনও উৎসব শেষ হলে পাহাড় প্রমাণ আবর্জনা পরিষ্কার করতে নাভিশ্বাস ওঠে পুরসভার। প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬২ মেট্রিক টন আবর্জনা হয় নবদ্বীপে। উৎসবের সময় তা আরও বাড়ে। আবর্জনার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য।

নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচার, নজরদারি, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শহরের মানুষকে খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষকে কী করে সচেতন করা যাবে তা ভেবে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুরসভা। দেখা গিয়েছে, বিপুল সংখ্যক মানুষ প্লাস্টিকের ব্যাগে খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে পুজোর সরঞ্জাম—সব নিয়ে আসেন। সে সব আবর্জনা হিসাবে ফেলে যান নবদ্বীপের পথ-ঘাট-পুকুর-মাঠে। পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা অবশ্য পুরসভার সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না। তাঁদের মতে, ইচ্ছা থাকলে উৎসবের সময় বা বিশেষ বিশেষ দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে মাইকে প্লাস্টিক বিরোধী প্রচার চালানো যায়। প্লাস্টিক ব্যবহারে তৎক্ষণাৎ জরিমানাও করা যেতে পারে। জায়গায় জায়গায় নজরদারির লোক রাখা যেতে পারে। সেই কাজে সংশ্লিষ্ট মঠ-মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু পুরসভা উদ্যোগী হয়নি।

পরিবেশ কর্মী অঞ্জন চতুর্বেদীর কথায়, “নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথ, ষ্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, খেয়াঘাটে ব্যানার-সহ মাইকে প্রচার হোক। উৎসবের সময় তা আরও বাড়ুক। যাঁরা প্লাস্টিক বয়ে আনছেন তাঁদের শহরের প্রবেশপথেই তা ফেলে দিতে বলা হোক। রিকশা, বাস, টোটোর গায়ে ‘নবদ্বীপ প্লাস্টিক মুক্ত শহর’ লিখে দিলে যাত্রীরা সতর্ক হবেন। দর্শনীয় স্থানগুলিতে কেউ প্লাস্টিকের প্যাকেট ও বোতল নিয়ে ঢুকতে গেলে তাঁকে আটকে দেওয়া হোক।” নবদ্বীপের মঠমন্দিরের সংগঠন গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের পক্ষ থেকে সম্পাদক অদ্বৈত দাস মহারাজ বলেন, “বিভিন্ন মঠমন্দিরে যে তীর্থযাত্রীরা আসেন তাঁদের প্লাস্টিক ব্যবহারে বিরত করতে আমরা খুব তাড়াতাড়ি প্রচার শুরু করছি।’’ পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা-র দাবি, “শুধু পুর অভিযান বা প্রচারে কাজ হবে না। প্লাস্টিক রুখতে মানুষের সদিচ্ছা থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nabadwip Plastic Pollution Plastic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE