Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

একই দড়ির ফাঁসে মৃত প্রেমিক যুগল, পরিবারের চাপ সহ্য না করতে পেরেই কি এই পরিণতি?

প্রাইভেট টিউশন থেকে আলাপ। ক্রমে তারা জড়িয়ে পড়েছিল ভালবাসার সম্পর্কে। স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল এক সঙ্গে পথচলার। কিন্তু মাত্র ১৭ বছর বয়সেই থেমে গেল তাদের জীবন।

মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। —নিজস্ব চিত্র।

মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভীমপুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

প্রাইভেট টিউশন থেকে আলাপ। ক্রমে তারা জড়িয়ে পড়েছিল ভালবাসার সম্পর্কে। স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল এক সঙ্গে পথচলার। কিন্তু মাত্র ১৭ বছর বয়সেই থেমে গেল তাদের জীবন। একই দড়ির দু’প্রান্তে তাদের ঝুলতে দেখে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। দুই পরিবার বাকরুদ্ধ। দুই কিশোর-কিশোরীর এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মানতে পারছে না তারা।

চাঁদেরপোল এলাকার বাসিন্দা অমিত প্রামাণিক (১৮) আর পাশের গ্রাম নাইকুড়ার বাসিন্দা অনিমা মণ্ডল (১৭)। রবিরার সারা রাত দুই পরিবার তাদের হন্যে হয়ে খুঁজেছে। কোথাও পাওয়া যায়নি। সকালে দুই পরিবারে নিজেদের মধ্যে কথা বলে হাজির হয়েছিল ভীমপুর থানায়, নিখোঁজ ডায়েরি করবে বলে। তখনই খবর আসে বাঁশবেড়িয়া গ্রামে একটি কলাবাগানের ভিতর মেহগিনি গাছের ডালে দু’জনের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা গিয়েছে। এক মুহূর্ত দেরি না-করে ছুটে যান দুই পরিবারের লোকজন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। পুলিশ মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

অমিত আসাননগর হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। বাবা আনন্দ প্রামাণিক পেশায় নাপিত। সঙ্গে কিছু জমিও আছে। দুই ভাই। অমিত ছিল ছোট। অনিমার বাবা নারায়ণ মণ্ডল দরিদ্র দিনমজুর। তারা তিন বোন। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অনিমা ছিল ছোট। বাবা-মার অত্যন্ত আদরের।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ছোট মেয়ের এই সম্পর্কের কথা মানতে পারেনি তার পরিবার। তারা আপত্তি করে। এমনকি তা নিয়ে বকাঝকাও করা হয় অনিমাকে। এ দিকে, বাড়ির ছোট ছেলের প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া মানেনি তার পরিবার। দুই পরিবার থেকেই চাপ আসতে শুরু করেছিল সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই ওই প্রেমিক যুগল আত্মঘাতী হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার অমিত ও অনিমা ভীমপুরে গৃহশিক্ষকের কাছে টিউশনে গিয়েছিল। আর ফেরেনি। রাত হয়ে গেলে দুই পরিবারের লোক আলাদা-আলাদা ভাবে খোঁজ শুরু করে। অমিতের দাদা রাতেই অনিমার বাড়িতে গিয়ে ভাইয়ের খোঁজ করেন। দুই পরিবার প্রথমে মনে করেছিল, দু’জনে বোধহয় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। সেই মতো তারা সকালে থানায় যায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে। অমিতের জ্যাঠামশাই স্বপন প্রামানিক বলছেন, “আমরা সম্পর্ক নিয়ে আপত্তিও করিনি। বকাঝকাও করিনি। তার পরও যে কেন এমন হল বুঝতে পারছি না।” অনিমার খুড়তুতো দাদা স্বরূপ মণ্ডলের কথায়, “কোথা থেকে কী হয়ে গেল! কোনও দিন তো ওকে এই নিয়ে কিছুই বলা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Couple Dead body Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE