Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশে অভিযোগ জানাতে গিয়ে জুটল সপাটে চড়

পড়শি যুবকের কুপ্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বছর পনেরোর মেয়েটি। আর সেই ‘অপরাধে’ লোহার রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তার। ওই ঘটনায় সীমান্ত ঘেঁষা মুরুটিয়ার বাড়ুইপাড়ার বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। বছর দুয়েক আগের সেই ঘটনায় ছাত্রীর মাথায় এখনও ক্ষতের দাগ মেলায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০২:০৩
Share: Save:

পড়শি যুবকের কুপ্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বছর পনেরোর মেয়েটি। আর সেই ‘অপরাধে’ লোহার রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় তার। ওই ঘটনায় সীমান্ত ঘেঁষা মুরুটিয়ার বাড়ুইপাড়ার বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। বছর দুয়েক আগের সেই ঘটনায় ছাত্রীর মাথায় এখনও ক্ষতের দাগ মেলায়নি। কিন্তু সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে গত ২০ জুন ফের ওই ছাত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ উঠল বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ, এ বারেও বিশ্বজিৎ ওই ছাত্রীকে অশালীন কথাবার্তা বলেন ও তাঁর বিরুদ্ধে পুরনো মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ‘‘ঘটনার দিন মুরুটিয়া থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। অভিযোগ তো নেয়ইনি। উল্টে আমার গালে চড় মেরে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়।’’ এ বারেও ওই ছাত্রী মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে ২২ জুন ছাড়া পেয়ে সে নিজে গিয়ে মুরুটিয়া থানায় বিশ্বজিৎ-সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

কিন্তু তারপরেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা তো দূরের কথা, অভিযুক্তের বাড়িতে বসেই চা খেয়ে থানায় ফিরে যায় বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘তদন্তকারী পুলিশ অফিসার আমার সঙ্গে এমন বাজে ব্যবহার করছিলেন যেন মনে হচ্ছে আমিই অপরাধী।’’ এমন ঘটনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে মুরুটিয়া থানার পুলিশ ও তদন্তকারী অফিসার বাসুদেব ঘোষের ভূমিকা নিয়ে। পুলিশের এমন তদন্তের ‘বহর’ দেখে সিঁটিয়ে আছে ওই ছাত্রীর পরিবার। তাদের অভিযোগ, পুলিশ ওদের কিছুই করবে না। আর সেই সাহসেই ওরা সমানে শাসিয়ে যাচ্ছে।

এমন ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ করিমপুরের বিধায়ক তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, ‘‘আমি অবিলম্বে এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব। ওই ছাত্রী ও তার পরিবার যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারেও পুলিশকে দেখতে বলব। এমন ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না।’’ তেহট্টের এসডিপিও দীপক সরকার বলছেন, ‘‘বিশ্বজিতের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

আর তদন্তকারী অফিসার বাসুদেব ঘোষ বলছেন, ‘‘বিশ্বজিৎকে ধরতেই ওর বাড়ি গিয়েছিলাম। চা খাবার প্রশ্নই ওঠে না।” বিশ্বজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর বাবা উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assaulted girl Refuse complaints Police Officer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE